দেশজুড়ে

১৫ বছর পর যমজ সন্তানের জন্ম, দেখে যেতে পারলেন না খুন হওয়া সুমন

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় প্রতিপক্ষের হাতে খুন হওয়ার আটদিন পর যমজ কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া।

বিয়ের দীর্ঘ ১৫ বছর পর দুই সন্তানের জন্ম হলো।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকাল সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নিহত সুমনের স্ত্রী সাজিয়া আফরিন লিজা যমজ সন্তানের জন্ম দেন। তবে জন্মের আটদিন আগেই তারা বাবাকে হারায়।

দীর্ঘদিন অপেক্ষায় থাকা সুমন তার সন্তানদের মুখ দেখে যেতে পারেননি। ঘাতকরা তার সব সপ্ন কেড়ে নিয়েছে।

নিহত সুমনের বাবা চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, আমার নাতনিরা ও পুত্রবধূ সুস্থ আছে। নাতনি দুইটা দেখতে সুন্দর হইছে। তবে আমার ছেলে সন্তানদের মুখ দেখে যেতে পারল না। তাদের সন্তান জন্মের আগেই সন্ত্রাসীরা আমার ছেলে সুমনকে হত্যা করেছে। হত্যা মামলায় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্য আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানাই।

নিহত সুমনের মামা জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে দুটি নবজাতক ও তাদের মা সুস্থ আছে। আজ যদি আমার ভাগিনা সুমন বেঁচে থাকত, তার আকাশে বাতাসে আবেগ আর আনন্দের ঝড় বয়ে যেত। আল্লাহ যেন তার স্ত্রী ও সন্তানদের হেফাজতে রাখেন।

তৃতীয় ধাপে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে ২২ মে বুধবার বেলা ১২টার দিকে রায়পুরার চরাঞ্চল পাড়াতলী ইউনিয়নে গণসংযোগে যান ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া। তাদের গাড়িবহর ইউনিয়নের মামদেরকান্দীতে পৌঁছলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল দলবল নিয়ে তার ওপর হামলা চালান। এতে আহত হয়ে দৌড়ে পালিয়ে স্থানীয় বাঁশগাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন সুমন। সন্ধ্যা ৬টায় সুমনকে উদ্ধার করে রায়পুরা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার তিনদিন পর আবিদ হাসান রুবেলকে প্রধান আসামি করে ২৬ জনের নামে নিহত সুমনের বাবা হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত চারজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন নিহত হওয়ার ঘটনায় গত ২৩ মে রায়পুরা উপজেলা পরিষদের সব পদে নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন (সিইসি)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *