৯ দফা দাবিতে লালদিঘী ময়দানে ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশ চলছে
৯ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি ময়দানে সমাবেশ করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টায় এ সমাবেশ শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের আমির ও চরমোনাইর পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মোহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতন পরবর্তী যা যা করণীয় ঠিক করতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উদ্দেশ্যে আমরা ৯ দফা দাবি নিয়ে সমবেত হয়েছি।’
মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলনা বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘যখন বাংলার জমিনে হায়েনার নগ্ন হামলা শুরু হয়েছে; তখন আল্লাহ এ ছাত্রদের পাঠিয়েছে। তাই আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। কিন্তু সেটি সরকারের পতন ঘটিয়ে আমাদের ফ্যাসিবাদি সরকারের হাত থেকে এ দেশকে বাঁচিয়েছে।’
সমাবেশ থেকে উত্থাপিত দাবিগুলো
১. অনতিবিলম্বে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় এমন সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে অনূর্ধ্ব ১৫ সদস্যবিশিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। যার মেয়াদ ৬ মাসের বেশি হতে পারবে না।
২. অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
৩. গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে গত ১৬ বছরে সংঘটিত সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। তদন্তসাপেক্ষে আহত/নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদেরকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
৪. তদন্তসাপেক্ষে গত ১৬ বছরে সকল দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নিতে হবে। বিগত ১৬ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। সব দুর্নীতি ও টাকা পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।
৫. আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যেসব কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
৬. দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনা ও অনুভূতির বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
৭. নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে।
৮. আওয়ামী দুঃশাসনের বিগত ১৬ বছরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এ দেশের সাধারণ শিক্ষা খাতের মান ও নৈতিকতা।
এই ক্ষতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ ও উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে একটি জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৯. উলামায়ে কেরাম জাতির ধর্মীয় নেতৃত্ব প্রদান করেন। তারা উম্মাহর ঈমান-আমল রক্ষায় কাজ করেন।