অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দিন, বরিশালে নির্বাচনী জনসভায় শেখ হাসিনা
৭ জানুয়ারি সকাল-সকাল ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান। ভাঙ্গা থেকে বরিশাল, কুয়াকাটা এবং পায়রা বন্দর পর্যন্ত ৬ লেনের সড়ক হবে। বিএনপি সন্ত্রাসী দল, বাংলাদেশে এদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। বরিশাল ছিল শস্যভান্ডার, আবারও সেই সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট
গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে দেশবাসীকে আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশসেবার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ এগিয়ে যায়। কাজেই এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।
শুক্রবার বরিশালের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিশাল নির্বাচনি জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আপনাদের কাছে আহ্বান-আপনারা ৭ জানুয়ারি একেবারে সকাল-সকাল ভোটকেন্দ্রে যাবেন। মার্কাটা কী? নৌকা মার্কা। এ সময় মানুষ দুহাত তুলে এবং কণ্ঠে গগনবিদারী চিৎকারে নৌকা মার্কার স্লোগান তুলে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের অঙ্গীকারের কথা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, এ নৌকা মার্কা হচ্ছে নুহ নবির নৌকা, মহাপ্লাবন থেকে মানুষকে রক্ষা করেছিল। এ নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। নৌকা মার্কায় ভোট দিলে এবার স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। ২১০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। এটা একমাত্র আওয়ামী লীগই করতে পারবে। ওই অগ্নিসন্ত্রাসী, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, যুদ্ধাপরাধী, অর্থ পাচারকারীরা পারবে না।
বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এ জনসভার আয়োজন করে। বরিশাল বিভাগের ছয়টিসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে জনসভাটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সর্বত্রই ছিল নির্বাচনি আমেজ, সবাই মেতেছিল ভোটের উৎসবে। বর্ণিল ও উৎসবমুখর জনসভায় দাঁড়িয়ে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে।
আমরা যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করি, তখন বিএনপি-জামায়াত তারা করছে অগ্নিসন্ত্রাস। আমি তাদের ধিক্কার জানাই। বিএনপি হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী দল। বাংলাদেশে এই সন্ত্রাসী দলের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। কারণ, তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আরেকটা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীর দল। এরা নির্বাচন চায় না। নির্বাচন বানচাল করতে চায়। বরিশালে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ছয় লেনের রাস্তা হবে : আগামী দিনে ক্ষমতায় এলে বরিশালে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ছয় লেনের সড়ক তৈরি করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের শস্যভান্ডার হিসাবে পরিচিত বরিশালে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, অবহেলিত বরিশাল আজ কোথায় আছে। বরিশাল কি উন্নত হয়েছে?
এ সময় উপস্থিত জনতা দুহাত তুলে বরিশালের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানান। শেখ হাসিনা বলেন, বরিশাল বিভাগে নৌবাহিনীর ঘাঁটি করেছি, সেনানিবাস করেছি, এলাকার উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি, সেখানে সোলার প্যানেলসহ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। ভোলার গ্যাস সিএনজি করে ঢাকায় নিচ্ছি। ভবিষ্যতে বরিশালেও নিয়ে আসব, যাতে আরও শিল্পকারখানা গড়ে ওঠে। তিনি বলেন, বরিশাল ছিল শস্যভান্ডার। আবারও সেই সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য খাদ্য সংরক্ষণাগার করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, তৃতীয় সাবমেরিন কেবল কুয়াকাটায় চলে আসবে, যাতে দক্ষিণাঞ্চলের ইন্টারনেট নির্বিঘ্ন হয়। বরিশাল ছিল অন্ধকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে, এখন প্রতিটি ঘরে আলো জ্বলছে। আমরা দিনবদলের সনদ দিয়েছিলাম, এখন দিন বদলে গেছে। ভাঙ্গা থেকে বরিশাল, কুয়াকাটা এবং পায়রা পোর্ট পর্যন্ত ছয় লেনের রাস্তা তৈরি করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই আমাদের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই বরিশালে আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না। এ সময় বরিশালে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, মেরিন একাডেমি করে দিয়েছি, প্রতিটি নদীর ওপর সেতু করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, বরগুনায় ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সুলতানা নাদিরা, পটুয়াখালীতে আ স ম ফিরোজ, এসএম শাহজাদা, মহিবুর রহমান, ভোলায় তোফায়েল আহমেদ, আলী আজম, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, বরিশালে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, জাহিদ ফারুক-এরা আওয়ামী লীগের প্রার্থী।
এ সময় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সদর আসনের নৌকার প্রার্থী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জাহিদ ফারুককে মনোনয়ন দিয়েছি। তার কারণে তাকে আমি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছি, অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সঙ্গে সে তার দায়িত্ব পালন করছে। কোথাও বন্যা-খরা হলে সে ছুটে যায়। কাজেই এই সততার সঙ্গে যে লোকটা কাজ করেছে, তাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে : বরিশালের দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আরেকজনকে মনোনয়ন দিয়েছি, মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ মল্লিক। তিনি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সঙ্গে যুক্ত আছেন। বঙ্গমাতা হাসপাতাল দেখাশোনা করেন। ঝালকাঠিতে বারিস্টার শাজাহান ওমর। ওই সন্ত্রাসী দল (বিএনপি) ছেড়ে সে এখন নৌকায় উঠেছে। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে।
এছাড়া ঝালকাঠিতে আমির হোসেন আমু, পিরোজপুরে শ ম রেজাউল করিম, বরিশাল-২ আসনে আমাদের রাশেদ খান মেনন, তিনি ১৪ দলের শরিক। আর বরিশাল-৪ আসনে আমাদের শাম্মী আহম্মেদকে দিয়েছি।
যদিও তার মনোনয়নটা হাইকোর্টে আটকা পড়ে আছে; কিন্তু আওয়ামী লীগ তাকেই মনোনয়ন দিয়েছে। পিরোজপুরে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তিনি আমাদের ১৪ দলের শরিক। এভাবে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় আমরা যাদের মনোনয়ন দিয়েছি, আপনাদের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দিলাম।
তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি : দেশের তরুণ ও প্রথম ভোটাররাও স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকায় ভোট দেবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি। নতুন ভোটারদের প্রতি আমার আহ্বান, যারা প্রথমবার ভোট দিতে আসবেন, নিশ্চয় চাইবেন না যে আপনার ভোট ব্যর্থ হোক।
কাজেই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে একটা জিনিসই চাই-বারবার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছে বলেই দীর্ঘ ১৫ বছর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। এজন্যই বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। যখন জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়নি। বাংলাদেশ পিছিয়ে গেছে।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ : আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তি খাতে দেশকে এগিয়ে নিতে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দক্ষ জনশক্তি আমরা গড়ে তুলতে চাই। যাতে বিশ্বের সঙ্গে শিক্ষা-দীক্ষায় সব দিক থেকে আমাদের তরুণ প্রজন্ম চলতে পারে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের ছেলেমেয়ে সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হবে। আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিখবে। দক্ষ জনশক্তি হবে। আমাদের সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্মার্ট সরকার হবে, আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট অর্থনীতি হবে, সমাজ ব্যবস্থা স্মার্ট হবে।
বিএনপি-জামায়াত দেশকে দুর্নীতির অভয়ারণ্য করেছিল : বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে দেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির অভয়ারণ্য করেছিল বলেও উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময়ে দেশে গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা হয়েছে। এমনকি আমার ওপর পর্যন্ত গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মানবঢাল করে সেদিন আমাদের রক্ষা করেছিল। এই বাংলাদেশকে তারা একটা সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দুর্নীতির অভয়ারণ্য করেছিল। এদের দেশের জনগণ আর চায় না।
অন্যরা যা বললেন : জনসভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে এমন নেতা, যে নেতা নির্বাচনি ইশতেহারে বলে, অতীতে যদি ভুল করে থাকি সামনে সেই ভুল সংশোধন করব। এমন সৎসাহস বাংলাদেশের রাজনীতিকদের মধ্যে আর কেউই দেখাতে পারেনি। ভুল থেকে শিক্ষা নেবে ক্ষমতার দাপটে নেতারা এটা স্বীকার করে না। শেখ হাসিনা সেটা স্বীকার করেছেন। শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না। জনগণ আমাদের শক্তি, কারও হুমকি-ধমকিতে শেখ হাসিনা-শেখ রেহানা মাথানত করেন না।
আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ রেহানা সার্বক্ষণিক শেখ হাসিনার পাশে থেকে দৃঢ়চেতা মন নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সাহস জোগান, সহযোগিতা করেন। সেই দুই কন্যা আজ এখানে উপস্থিত হওয়ায় বরিশালবাসী অত্যন্ত আনন্দিত ও উদ্বেলিত। আমরা তাকে স্বাগত জানাই, শুভেচ্ছা জানাই। এ সময় তিনি শেখ রেহানাকে বরিশালবাসীর উদ্দেশে কিছু বলার অনুরোধ জানান।
রাশেদ খান মেনন বলেন, এবারের নির্বাচন সহজ কোনো নির্বাচন নয়, এটি জটিল নির্বাচন। কারণ এই নির্বাচনের যাত্রা শুরু থেকেই বিএনপি-জামায়াত জোট ও তাদের সহযোগীরা আটকে দেওয়ার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা। মেনন বলেন, আজকে সেই নির্বাচনকে সফল করতে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক নয়, এই কথা সত্য নয়। নির্বাচনে জনগণ অংশগ্রহণ করবে। আমার নির্বাচনি এলাকা পরিপূর্ণ উৎসবে রূপ নিয়েছে।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে, উৎসাহে ও পৃষ্ঠপোষকতায় আমরা এক সময় রাজপথে ছিলাম। বর্তমানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রাজপথে ছিলেন। আমি নিজের বিষয়ে গর্ববোধ করতাম কারণ আমি অনেক পরিশ্রমী। কিন্তু শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ ১০ বছর যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে আমরা দেখেছি তিনি আমার চেয়েও অনেক বেশি পরিশ্রমী। তিনি দেশের জন্য অনেক ভাবেন। এই দক্ষিণবঙ্গবাসীর জন্য অনেক কিছু করেছেন। তাই জনগণের উচিত আরও ৫ বছরের জন্য শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করা।
নিজেকে আওয়ামী লীগের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য দাবি করে শাহজাহান ওমর বলেন, আমি আপনাদের দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। আশা করি আপনারা আমাকে সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসাবে গ্রহণ করবেন। আমি সর্বকনিষ্ঠ হলেও চেতনায় জয় বাংলা কিন্তু সর্বকনিষ্ঠ নই। অনেক পুরাতন।
এর আগে সকাল ৯টায় ঢাকা থেকে প্রটোকল ছাড়াই ব্যক্তিগত গাড়িতে সড়কপথে রওয়ানা হয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে দুপুর ১টায় বরিশালে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সার্কিট হাউজে কিছুক্ষণ বিশ্রাম শেষে বেলা ৩টায় বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা ও বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে বরিশালের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনি জনসভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তার আগেই লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে পুরো মাঠ উপচিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা রীতিমতো জনসমুদ্রে রূপ নেয়। পুরো বরিশাল মহানগরই শুক্রবার পরিণত হয়েছিল নির্বাচনি মিছিলের নগরীতে। হাতে লাল-সবুজ পতাকার সঙ্গে লাল-হলুদ-কমলা-নীলসহ নানা রঙের রঙিন গেঞ্জি, মাথায় টুপি, বাদ্য-বাজনার তালে তালে যোগ দেওয়া হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে উৎসবের আমেজ তৈরি করে গোটা এলাকায়।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন-বরিশালের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্মসাধারণ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) হাফিজ মল্লিক, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম, জাতীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীরসহ বরিশাল বিভাগের চারটি জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং অভিনেতা মীর সাব্বির ও অভিনেত্রী তারিন জাহান।
পরিচালনা করেন বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন এবং বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস। জনসভার মঞ্চে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না প্রমুখ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনি প্রচারের ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার নিজ নির্বাচনি এলাকা ও জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আয়োজিত জনসভায় নৌকায় ভোট চাইবেন।
টুঙ্গিপাড়ায় জনসভার পর প্রধানমন্ত্রী তার আরেক নির্বাচনি উপজেলা কোটালিপাড়ায় জনসভায় যোগ দেবেন। সেখান থেকে ঢাকায় ফেরার পথে মাদারীপুরের কালকিনিসহ অপর একটি নির্বাচনি জনসভায় যোগ দিতে পারেন বলে জানা গেছে।