চট্টগ্রামরাজনীতি

ছয় আসন ঘিরে সংঘাত-শঙ্কা

চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটি পূর্ণাঙ্গ এবং তিনটির আংশিক অবস্থান নগরে। এসব আসনের কয়েকটিতে প্রচারণার শুরু থেকেই লেগে আছে গোলাগুলি, হামলা-ভাঙচুর। অসংখ্যবার ঘটেছে হামলার ঘটনা। পক্ষে-বিপক্ষে হয়েছে মামলা-অভিযোগও। আগের অভিজ্ঞতায় ভোটাররা বলছেন, এবার চট্টগ্রাম নগরের একটি আসনসহ মোট ছয় আসনে নির্বাচনের দিন হতে পারে সংঘাত-সহিংসতা। কারণ আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ মনোনীত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কেউ কাউকে ছাড় দেওয়ার মানুষ নন।

তবে পুলিশ বলছে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবারের নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে মোট ভোটকেন্দ্রের ৭৫ শতাংশ কেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করেছে পুলিশ। আর এক্ষেত্রে মাথায় রাখা হয়েছে বিগত নির্বাচনে গোলাগুলি এবং সহিংসতার ঘটনা।আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সোচ্চার থাকবে প্রশাসন

এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানিয়েছেন, ‘চট্টগ্রামের পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ঘটনা ঘটেছে। সন্দ্বীপ ও মিরসরাইয়েও কিছু ঘটনা ঘটেছে। দোষীদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি। নির্বাচন পর্যন্ত যদি এ ধরনের ঘটনা চলমান থাকে, তাহলে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। কোনোভাবেই কেউ নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারবে না এবং সে ধরনের কিছু করতে দেওয়া হবে না।’

যেভাবে নিরাপত্তা দেবে পুলিশ-র‍্যাব

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের ২ হাজার ২৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১ হাজার ৪৮৮টি অর্থাৎ ৭৫ শতাংশ ভোটকেন্দ্রই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। নগরে ৬৬০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪৪৬টিকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পরিপত্র অনুসারে, চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ ভোট কেন্দ্রগুলোতে দুই জন করে অস্ত্রধারী পুলিশ ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে তিন জন করে অস্ত্রধারী পুলিশ থাকবেন। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে ১০ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য, এক অথবা দুই জন করে গ্রাম পুলিশ সদস্য থাকবেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, নগরের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে চারজন এবং কম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে তিনজন করে অস্ত্রধারী পুলিশ এবং ২ জন করে অস্ত্রধারীসহ ১৫ জন আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর পাশাপাশি মোবাইল টিম, থানা এবং কন্ট্রোল রুমে স্ট্রাইকিং টিম থাকবে। সোয়াত, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট ও ডগ স্কোয়াডের কে-নাইন ইউনিটকেও স্ট্রাইকিং হিসেবে রাখা হবে।

র‍্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালীতে র‍্যাবের টহল জোরদার রয়েছে। ভোটার যাতে নির্ভয়ে কেন্দ্রে যেতে পারেন এবং ভোট গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। কেউ বাধা দিলে প্রতিহত করা হবে।

চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে এখন ভোটার সংখ্যা ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার ৯২৫ জন। এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই সংখ্যা ছিল ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬১ জন। এবার ভোটার বেড়েছে ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৪৬৪ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *