নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা চকরিয়া-পেকুয়ায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের শঙ্কা
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে গত চারদিনে বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১০-১২টি দখল, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে হাতঘড়ি ও ট্রাক গাড়ির সমর্থকদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। হামলা ও নাজেহালে রেহাই পাচ্ছে না আওয়ামী লীগ নেতারাও।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবাসিক মহিলা কলেজের পাশে ডিস অফিস এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের নেতৃত্বে হামলার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করেছে দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে। তারা পালিয়ে রক্ষা পায়।
ধাওয়ার শিকার হয়েছেন, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আমান উদ্দিন (৪৪) ও চিরিঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাফ উদ্দিন কাজল (৪২)। তারা দুজনই হাতঘড়ির সমর্থক বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ নেতা আমান উদ্দিন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবাসিক মহিলা কলেজের পাশে ব্যবসায়ী সন্তোষ শর্মার চায়ের দোকানে আমি ও চিরিঙ্গা ইউনিয়র আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাব উদ্দিন কাজলসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি আড্ডা দিচ্ছিলাম। ওইসময় সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলম ও তার অনুসারীরা তিনটি গাড়ি নিয়ে চায়ের দোকানের সামনে নামেন। সাবেক এমপি জাফর আলম ও অনুসারীরা অতর্কিতভাবে আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার চেষ্টা করে।
চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগ নেতাদের উপর হামলা ও নাজেহালের ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে হাতঘড়ি ও ট্রাক প্রতীকের সমর্থকরা।
এদিকে তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে চকরিয়া থানার পুলিশের তিনটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন সিসি ক্যামরার তথ্য সংগ্রহ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছেন। বর্তমানে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজের পাশে একটি চায়ের দোকানে সাবেক সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে মর্মে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। বর্তমানে সেখানে পুলিশের তিনটি টিম রয়েছে। ঘটনাস্থলের আশপাশে সিসি ক্যামরার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরপরই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে রাত ৯টার দিকে কাকারার সাকের মোহাম্মদ চর স্টেশনে কামালের ছেলে সোহেল প্রকাশ্যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে, যারা হাতঘড়ির পক্ষে কাজ করেছে তাদের পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করা হবে। যাকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই পেটানো হবে। ওই সময় তার সাথে ৭-৮ জন ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী ছিল। এ নিয়েও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্টরা আইনের আশ্রয় নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অন্যদিকে পেকুয়ার মগনামায় ট্রাক প্রতীকের দুইজন সমর্থককে পিটিয়ে আহত করেছে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরীর অনুসারীরা। এ ঘটনায় পেকুয়া থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছ।