ফজলে করিমের সমর্থন নিয়েই মাঠে নামতে চান সম্ভাব্য প্রার্থীরা
ফজলে করিমের সমর্থন নিয়েই মাঠে নামতে চান সম্ভাব্য প্রার্থীরা
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে রাউজানে। পথে-ঘাটে, হাটে-বাজারে, অফিস আদালতে, জনকোলাহলপূর্ণ স্থানে চলছে এই নির্বাচন নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ‘শান্তির জনপদ’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া রাউজানে কারা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হচ্ছেন, সেই আলোচনায় মুখর সব জায়গা।
রাউজানে চতুর্থবারের মতো উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল। টানা ৫ বারের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর একান্ত আস্থাভাজন এবং সুখ-দুঃখের সাথী হিসেবে রাউজানের মানুষের কাছে পরিচিত একেএম এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল। সে হিসেবে তিনি এবারও ফজলে করিম এবং আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়ার ব্যাপারে পূর্ণ আশাবাদী।
এই হেভিওয়েট প্রার্থীর সাথে এবার লড়তে চান বিনাজুরী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ইয়াছিন চৌধুরী, বর্তমান পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশির উদ্দিন খান, উপজেলা আ. লীগের সহ-সভাপতি ইরফান আহমদ চৌধুরী ও উপজেলা আ. লীগের সহ-সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত।
তবে নির্বাচনী মাঠে এ পর্যন্ত সক্রিয় কেবল বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল। অন্যদিকে ইয়াছিন চৌধুরী আগামী কিছুদিনের মধ্যে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে তার নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করবেন বলে জানা গেছে। অন্যরা নির্বাচনী মাঠ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। পরিবেশ-পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে তাদের প্রার্থিতা- এমনটাই জানিয়েছেন তারা।
জানা যায়, স্বাধীনতার পর এনডিপি-বিএনপির দুর্গ রাউজানকে ২০০১ সাল থেকে টানা ৫বার সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে তৈরি করেছেন এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। এখানে ফজলে করিমের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেউ যেতে চান না। এবারের উপজেলা নির্বাচনেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা তার পূর্ণ আশীর্বাদ চান।
জানতে চাইলে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও সম্ভাব্য প্রার্থী একেএম এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল বলেন- ‘আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাউজানের এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর আদর্শের রাজনীতি করি। অতীতেও দল আমাকে যোগ্য মনে করে প্রার্থী করেছে। এবারও আমি দল এবং ফজলে করিমের সমর্থন চাই। দল এবং ফজলে করিমের বাইরে আমি নেই।
সম্ভাব্য প্রার্থী পৌর প্যানেল চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন খান বলেন- ‘আমরা কেউ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না। উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ফজলে করিম চৌধুরী যাকে পছন্দ করবেন, তিনিই হবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তবে আমি আশাবাদী প্রার্থিতার ব্যাপারে।’
সম্ভাব্য প্রার্থী ইরফান আহমদ চৌধুরী ও শ্যামল কুমার পালিতও জানিয়েছেন, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর পরামর্শ পেলেই তারা প্রার্থী হবেন। অন্যথায় নয়।
তবে এবার সিরিয়াসলি নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন ইয়াছিন চৌধুরী। তিনি বলেন- ‘আমার বাবা বিনাজুরী ইউপির চেয়ারম্যান ছিলেন, আমিও ছিলাম। গতবারও আমি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম। এবার সিরিয়াসলি নির্বাচন করবো। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে আমার প্রার্থিতার ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে জানাতে চাই। দলীয় এবং ফজলে করিম চৌধুরীর সমর্থন পেলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, রাউজানের প্রথম নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন নোয়াপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মরহুম এম. আবদুল্লাহ। এর পরের নির্বাচনে চেয়ারম্যান হন পৌরসভা সদরের হাজীপাড়ার বাসিন্দা মরহুম অধ্যাপক লোকমান হাকিম। দীর্ঘদিন ওই পদ বিলুপ্ত থাকার পর উপজলা পরিষদ নির্বাচন চালু হওয়ার পর থেকে টানা তিন মেয়াদে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল।
১৪ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা রয়েছে রাউজানে। এ উপজেলার আয়তন ২৪৩ বর্গ কিলোমিটার। উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৬ লাখ ৫০ হাজার ৫৩৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৩ লাখ ৬ হাজার ২৩০ জন এবং মহিলা ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩০৬ জন। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৬ হাজার ৯২০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার ২১৮ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৫০ হাজার ৭০২ জন।