চট্টগ্রাম

বিপ্লব উদ্যানে আরও স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ চসিকের

দোকানসহ নানা ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের কারণে চট্টগ্রাম নগরের বিপ্লব উদ্যানের সবুজ ও উন্মুক্ত পরিসরের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছিল। এ অবস্থায় আবারও উদ্যানটিতে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য ভরাট করা হয়েছে পানির ফোয়ারা। ভেঙে ফেলা হয়েছে গ্লাস টাওয়ারও।

এ নির্মাণকাজ করতে গিয়ে উদ্যানে প্রবেশের মূল পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাঁচ দিন আগে বড় বড় ব্যানার টানিয়ে উদ্যানের চারপাশ ঘেরাও করা হয়েছে। নগরের দুই নম্বর গেটে অবস্থিত উদ্যানটিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ না করার এবং পুরোনো স্থাপনা অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিল নাগরিক সমাজ, নগর–পরিকল্পনাবিদ ও বিভিন্ন সংগঠন। ‘সবুজ ধ্বংস করে নতুন স্থাপনা আর নয়’ লেখা একটি ব্যানার টানানো হয়েছে উদ্যানে। নগরবাসীর পক্ষ থেকে এ ব্যানার লাগানো হয়েছে।

কিন্তু সবার আপত্তি উপেক্ষা করে উদ্যানে নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণে অনড় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিও করেছে সংস্থাটি। উদ্যানের পরিবেশ রক্ষায় নতুন করে স্থাপনা নির্মাণের প্রক্রিয়া স্থগিত করার দাবি জানিয়েছেন নগর–পরিকল্পনাবিদ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

গত বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে উদ্যানে অবকাঠামো নির্মাণপ্রক্রিয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন উদ্যানের দোকানিরা।

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কথা বলতে রাজি হননি। তবে দুই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এখানে আবার অবকাঠামো নির্মাণ করা হলে উদ্যানটি জঞ্জালে পরিণত হবে।

১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম দুই নম্বর গেটে গাছগাছালিতে ভরা দুই একরের এই উদ্যান গড়ে তোলা হয়। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী, উদ্যানে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশের বেশি কংক্রিট অবকাঠামো থাকতে পারবে না। আর আন্তর্জাতিকভাবে ২ শতাংশও অনুমোদন করে না। কিন্তু চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানের কংক্রিট অবকাঠামোর পরিমাণ অন্তত ৫৫ শতাংশ।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থীর করা জরিপে উদ্যানের এই দশা জানা যায়। এখন সেখানে আবার স্থাপনা করা হলে উদ্যানে উন্মুক্ত পরিসর ও সবুজ পরিবেশ বলে কিছুই থাকবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চলতি বছরের আগস্টের শেষ সপ্তাহে বিপ্লব উদ্যানের সৌন্দর্যবর্ধন ও বিনিয়োগ নিয়ে রিফর্ম কনসোর্টিয়াম নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি হয় সিটি করপোরেশনের।

বিপ্লব উদ্যানে নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণে বিভিন্ন মহল থেকে আপত্তি এসেছে বলে স্বীকার করেছেন সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। তিনি গতকাল শনিবার বিকেলে বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান উদ্যানের সৌন্দর্যবর্ধনে নকশা উপস্থাপন করেছিলেন। এটা মেয়রের পছন্দ হয়েছিল।

অবশ্য এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। এ ব্যাপারে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে আলাপ করার পরামর্শ দেন। তবে মেয়রের মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে খুদে বার্তা ও হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দেওয়া হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *