ডিবির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা সেই ফ্রিল্যান্সারের নামে মামলা
চট্টগ্রামে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে আটক হওয়ার পর তাদের হেফাজতে থাকাকালে অ্যাকাউন্ট থেকে পৌনে ৩ লাখ ডলার খোয়ানোর অভিযোগ তোলা ফ্রিল্যান্সার আবু বক্কর সিদ্দিকসহ তিনজনের নামে নিয়মিত মামলা করেছে ডিবি পুলিশ। বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৪৭-এর ২৩-এর ১ ধারায় করা ওই মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (২ মার্চ) চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মহানগর ডিবির উপপরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
এদিকে হেফাজতে থাকাকালে ডিবির ওই টিমের বিরুদ্ধে তার বাইন্যান্স (ক্রিপ্টোকারেন্সি একচেঞ্জ; যা বাংলাদেশে অবৈধ) অ্যাকাউন্ট থেকে ‘পৌনে ৩ লাখ ডলার হাতিয়ে নেওয়ার’ যে অভিযোগ আবু বক্কর তুলেছেন, তা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে মহানগর পুলিশ।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সিনহা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে ডিবি পুলিশের মামলার তিন আসামির মধ্যে আবু বক্কর ছাড়া অপর দুজনের নাম তাৎক্ষণিক জানাতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর-দক্ষিণ) পুলিশের উপকমিশনার মোসা. সাদিরা খাতুন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এখানে দুটি ঘটনা আছে। একটা হলো ক্রাইম, আরেকটা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আমরা দুটি বিষয়ই দেখছি। বিটকয়েন ব্যবহার করায় তিনজনকে আসামি করে একটা নিয়মিত মামলা হয়েছে। আর পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটা কমিটি করা হয়েছে।’
আবু বক্কর সিদ্দিক চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন গুলবাগ আবাসিকের বাসিন্দা। সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার তিনি। তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে তাকেসহ ফয়জুল আমিন নামে আরও একজনকে গুলবাগ থেকে আটক করে নিয়ে যায় চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের একটি দল। পরদিন বিকালে অনলাইন জুয়া খেলার অভিযোগে সিএমপি অধ্যাদেশে একটি নন এফআইআর মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান করে ডিবি পুলিশ। আদালত তাদের ১০০ টাকা হারে জরিমানা করে মুক্তি দেন।
মুক্তির পর পরিদর্শক রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তাকে তুলে নেওয়া ডিবির ওই টিমের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন এই ফ্রিল্যান্সার।
তিনি দাবি করেন, সেদিন হেফাজতে থাকাকালে গোয়েন্দা পুলিশের ওই টিমের কর্মকর্তারা তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট থেকে ৪ দশমিক ৯৭৩৭ বিটকয়েন হাতিয়ে নিয়েছেন। ডলারের হিসেবে যার পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৭২ হাজার ডলার।
আবু বক্কর আরও দাবি করেন, তারা তার ক্রিপ্টোকারেন্সির বিষয়ে জানতেন। সেদিন আটকের পর ছাড়া পেতে দশ লাখ টাকা দেওয়ার পরও ডিবি পুলিশের সদস্যরা তার বিটকয়েন হাতিয়ে নিয়েছেন। যার প্রমাণাদি তার কাছে রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
যদিও পরিদর্শক রুহুল আমিন তা অস্বীকার করে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেছিলেন, ‘অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা বা বিটকয়েন সরানোর বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
এ বিষয়ে আগের ঘটনা জানতে ডিবি তুলে নেওয়ার পর যুবকের পৌনে ৩ লাখ ডলার হাওয়া প্রতিবেদনটি পড়ুন।