ষড়যন্ত্র নাশকতা নাকি অন্যকিছু!
কর্ণফুলী নদীর এপারে শহরপ্রান্তে এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন হিমাগারে আগুন। এর ঠিক দুদিন পর ওপারে কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা এলাকায় একই গ্রুপের সুগার মিলে আগুন। দুটি অগ্নিকাণ্ডই ভয়াবহ, তিন থেকে চার ঘণ্টা পর হিমাগারের আগুন নেভানো গেছে। তবে সুগার মিলের আগুন নেভানো যাচ্ছে না ২৪ ঘণ্টার চেষ্টায়ও। ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন নেভাতে সময় লাগতে পারে দুই থেকে তিনদিন! ষড়যন্ত্র নাশকতা নাকি অন্যকিছু!
এদিকে একাধিক অগ্নিদুর্ঘটনাও ভাবাচ্ছে না কারখানা কর্তৃপক্ষকে! এটি ষড়যন্ত্র, নাশকতা নাকি অন্যকিছু— সংশ্লিষ্টরা আপাতত সেদিকটিও খুঁজতে চান না। এসব নিয়ে বলতে রাজি নন কোনো কথা। তবে এস আলম গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানে পরপর বড় অগ্নিকাণ্ড দাগ কেটেছে মানুষের মনে। চিনিরকলে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রব উঠেছে রোজা ঘিরে চিনির বাজার নিয়ে নানা প্রসঙ্গ। রটেছে আগুনে বীমাসুবিধা পাওয়ার কথাও। বাজারে স্বাভাবিক সরবরাহ নিয়ে কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করলেও বলছেন অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি করার শঙ্কার বিষয়।
গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের ভাষ্য, অগ্নিকাণ্ডকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা দুই-একদিন বাজারে চিনি নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে। তাঁর এ আশঙ্কার আঁচও পাওয়া গেছে দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে। অন্যদিকে কারখানার গোডাউনে মজুদকৃত কাঁচামালের পরিমাণ নিয়ে তথ্যের গরমিল দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের কথায়।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যায় অগ্নিকাণ্ডস্থলে আসেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যরা। দুপুর দেড়টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার (জিমএম-করপোরেট) মোহাম্মদ আকতার হোসেন। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
কম সময়ে পরপর দুটি অগ্নিকাণ্ড, প্রতিষ্ঠান কীভাবে দেখছে— এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম মোহাম্মদ আকতার হোসেন বলেন, ‘এ জাতীয় প্রশ্নের দিকে আমরা এখন যেতে চাচ্ছি না। কেউ ষড়যন্ত্র করেছে কিনা, নাকি নাশকতা করেছে, সে ধরনের কোনো প্রসঙ্গ নিয়ে এখন কথা বলতে চাই না। আর আমরা মানসিকভাবে সেরকম প্রস্তুতও নই এই মুহূর্তে।’
এস আলমের আগুনের আঁচ খাতুনগঞ্জে
কর্ণফুলীর দক্ষিণ পারে এস আলম সুগার মিলের আগুনের আঁচ লেগেছে দেশের বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে। সোমবার বিকেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, আর মঙ্গলবার সকাল থেকেই খাতুনগঞ্জে বেড়ে গেছে চিনির দাম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের পরপরই কেজিপ্রতি দুই থেকে তিন টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চিনি। সোমবার সকালেও চিনির বাজার ছিল নিম্নমুখী।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চট্টগ্রামে একটিমাত্র চিনির কারখানা রয়েছে। সেই কারখানায় আগুন লেগেছে। আর সেই হিসেবে চিনির সংকট হবে মনে করে দাম বেড়ে গেছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রামের একমাত্র চিনির কারখানা। বাজারে কমবেশি প্রভাব তো পড়বেই।‘