চট্টগ্রাম

স্যুয়ারেজ নিয়ে আরো ৫ প্রকল্প

স্যুয়ারেজ নিয়ে আরো ৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। প্রকল্পগুলোর ডিপিপি তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে এগুলো অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। গৃহীত প্রকল্পগুলোর মধ্যে দুইটি জাপানের জাইকা, একটি দক্ষিণ কোরিয়ার দাতা সংস্থা ইডিসিএফ, একটি ফ্রান্সের এএফডি এবং অপর একটি জাপানের মারুবিনি কর্পোরেশনের অর্থায়নে বাস্তবায়ন হবে বলে ওয়াসা সূত্র জানা গেছে।

এদিকে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ওয়াসার প্রথম স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। ৩ হাজার ৮০৮ কোটি ৫৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে স্যুয়ারেজ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষ হলে চট্টগ্রাম শহরে এটিই হবে স্যুয়ারেজের ওপর ওয়াসার প্রথম প্রকল্প। ২০২৬ সালে এটির কাজ শেষ হওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।

ওয়াসা সূত্র জানায়, ‘ওয়াসার মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় পুরো শহরকে ৬টি ক্যাচমেন্টে ভাগ করা হয়। প্রণীত প্ল্যানের সুপারিশ অনুযায়ী জোন-১ এর জন্য প্রথম স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ওয়াসা। বর্তমানে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে প্রকল্পের কাজ। বর্তমানে প্রকল্পের অধীনে পয়ঃশোধনাগার, ফিক্যাল স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ এবং পয়ঃপাইপ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। একইসাথে চলছে গ্রাহক পর্যায়ে পয়ঃসংযোগ লাইন প্রদানের কাজও। এ কাজ বাস্তবায়নে বাসাবাড়ির সীমানার অভ্যন্তরে নতুন ইনস্পেকশন পিট নির্মাণ, পয়ঃবর্জ্য সংগ্রহের পাইপলাইন নির্মাণ/স্থানান্তর ও বিদ্যমান বৃষ্টির পানির লাইন হতে পয়ঃবর্জ্য লাইন পৃথকীকরণ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), সেপটিক ট্যাংক বাইপাস পূর্বক নতুন পিটে সংযুক্ত করা ও পরবর্তী স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে এটি বন্ধ করা এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ করা হচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ঠিকাদার সংস্থা তায়ং ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এ প্রকল্পের কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকার ও ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর নগরীর ২০ লাখ মানুষ স্যুয়ারেজের আওতায় আসবে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (সিওয়াসা) এর আগে নগরীতে শুধুমাত্র পানি সরবরাহ করেছে। স্যুয়ারেজ বা পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প গ্রহণ করতে পারেনি। এটিই হচ্ছে ওয়াসার গৃহীত প্রথম স্যুয়ারেজ প্রকল্প।

সূত্র জানায়, নগরীর হালিশহরে চট্টগ্রাম ওয়াসার ১৬৩ একর জায়গাতে পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প স্থাপন করা হচ্ছে। প্রকল্পের অধীনে বাসাবাড়ির তরলবর্জ্য সংগ্রহ ও পরিবহনের জন্য ২০০ কিলোমিটার পয়ঃলাইন স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২৮ হাজার সার্ভিস কানেকশন দেওয়া হবে। যার মাধ্যমে বাসাবাড়ির পয়ঃবর্জ্য সংগ্রহ করে পরিশোধনের পর তার পানি সাগরে ফেলে দেওয়া হবে। অবশিষ্ট কঠিন বর্জ্য দিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি হবে। এর জন্য তৈরি হচ্ছে দিনে ১০ কোটি লিটার ধারণ ক্ষমতার একটি পয়ঃশোধনাগার প্ল্যান্ট এবং দৈনিক ৩০০ টন ধারণ ক্ষমতার একটি ফিকেল স্লাজ শোধনাগার।

ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘স্যুয়ারেজ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে নগরীর ২১টি ওয়ার্ডের ৩৬ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে পয়ঃনিষ্কাষণ সেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এজন্য পয়ঃসংযোগের কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের অধীনে ২৮ হাজার সার্ভিস কালেকশনের মধ্যে আড়াই হাজার সংযোগ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে নগরীর অবশিষ্ট ৫টি ক্যাচমেন্ট এলাকায় স্যুয়ারেজ প্রকল্পের জন্য ডিপিপি তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের পর পুরো শহরে স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ‘স্যুয়ারেজ প্রকল্প’। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের প্রায় ৪৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তাছাড়া মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর স্যুয়ারেজ নিয়ে আরো পাঁচ প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু করবে ওয়াসা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *