চট্টগ্রামফটিকছড়ি

নলকূপে উঠছে না পানি, ফটিকছড়িতে কষ্টে হাজারও মানুষ

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি উঠছে না। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ।

সাধারণ মানুষের অভিযোগ, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষিকাজে ব্যবহারের জন্য অপরিকল্পিতভাবে অসংখ্য সেচযন্ত্র বসানো হয়েছে। এসব সেচ যন্ত্রের পানি কৃষিকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ভূগর্ভ থেকে। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সাধারণ নলকূপে পানি উঠছে না। এতে এলাকার হাজার হাজার লোকজন দুর্ভোগে পড়েছেন।

দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ সাজিব উদ্দিন বলেন, ‘কৃষিকাজে ব্যবহৃত এসব সেচযন্ত্রের কারণে আমাদের বাড়ির নলকূপসহ এলাকার কোথাও টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এছাড়া পানি তোলার পাম্পেও কোন পানি উঠছে না। ফলে আমাদের নিত্যব্যবহার্য কাজে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। দিনের বেশিরভাগ সময় দূর-দূরান্তের পুকুর থেকে পানি এনে গৃহস্থালীর কাজ সারা হচ্ছে।’

আজিমনগর গ্রামের গৃহিনী আনিকা আকতার বলেন, ‘এলাকার কয়েকটি সেচযন্ত্রের যত্রতত্র ব্যবহারের ফলে কোথাও টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। বিষয়টি জনপ্রতিনিধিদের বলা হলেও তারা কাজের কাজ কিছুই করছেন না। তিনি অবিলম্বে সেচযন্ত্রগুলো বন্ধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।’

এসব ব্যাপারে রোসাংগিরি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম শোয়েব আল ছালেহীন বলেন, ‘এলাকার সেচযন্ত্রগুলো রাতের বেলায় চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা তা কানে নিচ্ছেন না। ফলে এলাকার অনেক নলকূপে পানি উঠছে না। এমতাবস্থায় এলাকার লোকজন পানির কষ্টে ভুগছেন।’

সূত্র জানায়, উপজেলার এসব এলাকায় যত্রতত্র সেচযন্ত্র চালানোর ফলে বর্তমান শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় শতকরা নব্বই ভাগ টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক স্থাপিত নলকূপগুলোর প্রায় ৮০ শতাংশই দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। জনস্বাস্থ্য বিভাগ এসব অকেজো নলকূপ মেরামত বা সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রণবেশ মহাজন বলেন, ‘অকেজো নলকূপগুলো মেরামতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলার যে সব অঞ্চলে পানির সংকট দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে উত্তর রোসাংগিরি এবং আজিমনগরে স্থাপিত সেচযন্ত্রগুলো শুধু রাতের বেলায় চালাতে লিখিতভাবে নির্দেশ রয়েছে। তারপরও তারা দিন-রাত এসব চালাচ্ছেন। শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘সেচযন্ত্রের কারণে এলাকার বিভিন্ন স্থানে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সেচযন্ত্রের কারণে মানুষ কষ্ট পেতে পারে না। এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর যদি সেচযন্ত্রগুলো দিনের বেলায় চালানো হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *