পানি স্বল্পতায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি রুটে নৌযান চলাচল ব্যাহত
শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি জলপথে নৌযান চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে চালক ও যাত্রী সাধারণ। বিশেষ করে বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি থেকে ফারুয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিঃ মিটার নৌ পথে পানির স্তর এতই নীচে নেমে গেছে যে অনেক জায়গায় ছোট ছোট ই্ন্জিন চালিত বোট দিয়ে চলাচলরত যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে টেনে টেনে বোট চালাতে হচ্ছে। লেকের অনেক জায়গায় এক হাঁটুর নীচে পানি নেমে গেছে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বিলাইছড়ি উপজেলাধীন ১নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন ও ২নং কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের মধ্যবর্তী কেরংছড়ি এলাকায় দেখা গেছে, এই অংশে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর এতই কমে গেছে যে, ছোট বোট থেকে পযর্ন্ত যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সময় চালক ও যাত্রীরা একসাথে বোটকে টেনে নিয়ে আটকে পড়া অংশটুকু পার করছেন। শুধু কেরংছড়ি এলাকা নয়, নৌ পথে এসবেন, কেংড়াছড়ি, গাছকাটাছড়া, বিলাইছড়ি সদরসহ অনেক জায়গায় পানি স্বল্পতায় নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বড় বোটের পরিবর্তে ছোট ছোট বোট দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
কাপ্তাই-বিলাইছড়ি জল পথে চলাচলকারী যাত্রী বিলাইছড়ি উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নিরালা এবং যাত্রী সুনিল তনচংগ্যা, মোঃ ইসমাইল জানান, জানুয়ারি থেকে কাপ্তাই লেকে অস্বাভাবিক হারে পানির স্তর কমতে থাকে। ফলে আমাদের চলাচলে বেশ অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে। অনেক জায়গায় ইন্জিন চালিত বোট থেকে নেমে নিজেরাই বোটকে টেনে নিয়ে আটকে পড়া অংশ পার করতে হয়।
বোট চালক মোঃ নাছির জানান, বেশ কয়েকমাস ধরে লেকে পানি স্বল্পতার কারণে আমরা স্বাভাবিক ভাবে বোট চালাতে পারছি না। চরে বোটগুলো আটকে যাচ্ছে।
১নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান, চলতি মৌসুমে কাপ্তাই–বিলাইছড়ি ও রাঙামাটি নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রীদের বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। কাপ্তাই লেকের যেখানে নাব্যতা কমে গেছে সেখানে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) থেকে সদর ইউনিয়ন এবং কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের কিছু শ্রমিক দিয়ে লেক থেকে মাটি অপসারণের মাধ্যমে কিছুটা হলেও নৌ চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জরিপ করে গেছে যেখানে নাব্যতা কম, সেখানে ড্রেজিং করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি।
বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামশেদ আলম রানা বলেন, বিলাইছড়ি উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের উদ্যোগে ব্যাহত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। এ কাজে গত সোমবার থেকে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় কিছু শ্রমিক দিয়ে লেক হতে মাটি অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। অচিরেই পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব জায়গায় ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করবে বলে আমরা আশা করছি।