এই গরমে মেঝেতে ঘুমানো ভালো নাকি খারাপ?
গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। বাইরে তো নয়ই, বাড়ির ভেতরেও শান্তি মিলছে না। ফ্যানের বাতাসও যেন কিছুক্ষণের মধ্যে গরম হয়ে যাচ্ছে। নরম বিছানাকেও যেন আগুনের গোলা মনে হয়। তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই বিছানা ছেড়ে মেঝেতে ঘুমোচ্ছেন।
মেঝের ঠান্ডায় একটু হলেও শরীর জুড়ায়। অনেকেই পুরো গরমকালটাই মাটিতে শুয়ে কাটিয়ে দেন। কিন্তু এতে কি উপকার হয় নাকি ক্ষতি হয়?
চলুন জেনে নেওয়া যাক মেঝেতে ঘুমালে শরীরে কী ঘটে।
পিঠের ব্যথা কমে : মেঝেতে ঘুমালে মেরুদণ্ড ভালোভাবে সোজা হয়ে থাকে। এর ফলে যাদের পিঠে ব্যথার মতো সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে উপকার মিলতে পারে। কারণ মেরুদণ্ড সোজা হয়ে থাকলে পিঠে আরাম পাওয়া যায় আর সমস্যাও অনেকটা কমে আসে। সেইসঙ্গে এই অভ্যাসের ফলে কমতে পারে কোমরের ব্যথাও। তাই মেঝেতে ঘুমানোকে মোটেই ক্ষতিকর অভ্যাস বলা যাচ্ছে না।
অনিদ্রা দূর হয় : গরমের সময়ে অনেকেই অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন। গরমের ফলে বারবার ঘুম ভেঙে যেতে পারে বা ভালোভাবে ঘুম না-ও হতে পারে। এক্ষেত্রে মেঝেতে ঘুমালে আরামে ঘুমানো সম্ভব। ফলে অনিদ্রা বা ঘুম না হওয়ার সমস্যা অনেকটাই দূর হয়।
ঘাড়ের ব্যথা কমে : ঘুমের সময় ঘাড় সোজা করে না রাখলে ঘাড় ও পিঠে ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে আপনি যদি আঁকাবাঁকা হয়ে ঘুমান তাহলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। তবে মেঝেতে ঘুমালে এ ধরনের সমস্যা এড়ানো যায়। কারণ, এ ক্ষেত্রে ঘাড় সোজা রাখা সহজ হয়।
রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় : শরীর সুস্থ রাখার জন্য রক্ত সঞ্চালন ভালো হওয়া জরুরি। তবে মেঝে বা শক্ত জায়গায় ঘুমালে শরীরের রক্ত সঞ্চালনও ভালো হয়। তাই মেঝেতে শুলে সেই হিসাবেও শরীর ভালো থাকে।
মেঝেতে ঘুমানোর সমস্যা : মেঝেতে ঘুমালে যেমন উপকারিতা আছে তেমন শরীরে কিছু সমস্যাও হতে পারে। সেই বিষয়েও ভালো করে জেনে রাখা দরকার। বিশেষ করে যাদের কিছু শারীরিক সমস্যা আছে, তাদের মেঝেতে ঘুমানো উচিত নয়।
১. মেঝেতে প্রায়শই বেশি ধুলোবালি ও ময়লা জমে। বিশেষ করে কার্পেটের ওপর ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে এর থেকে হাঁচি, সর্দি, চুলকানি, চোখ লাল হওয়া, শ্বাসকষ্ট ও কাশির মতো অ্যালার্জির সমস্যা বাড়তে পারে। তাই মেঝেতে ঘুমানোর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং মেঝে ভালোমত পরিষ্কার করে ঘুমান।
২. গরমে ঠান্ডা মেঝেতে ঘুমালে আরাম পেতে পারেন, তবে ঠান্ডায় ঘুমোনোর কারণে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে শরীরের তাপ দ্রুত কমাতে পারে ও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠান্ডা অনুভূত হয়। ফলে জ্বর হতে পারে।
তাই মেঝেতে ঘুমানো আপনার জন্য ঠিক কি না, তা নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেবেন না। প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। তার থেকে ভালো করে জেনে নিয়ে তবেই মেঝেতে ঘুমাবেন।