জাতীয়

দ্বিতীয় ধাপেও ভোটার খরা, রাজনৈতিক সংকটকে দুষলেন সিইসি

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপের পর দ্বিতীয় ধাপেও ভোটার খরায় শেষ হয়েছে ভোটগ্রহণ। গত ধাপে ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছিল, এবারের ধাপেও এর আশপাশেই ভোট পড়েছে বলে ধারণা করছে নির্বাচন কমিশন। ভোটারের এই উপস্থিতি উৎসাহব্যঞ্জক নয় স্বীকার করলেও এটাকে নির্বাচন কমিশনের কোনো সংকট হিসেবে দেখছেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি এর জন্য রাজনৈতিক সংকটকে দায়ী করেছেন। রাজনৈতিক সংকটের সুরাহা হলে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে মনে করেন সিইসি।

দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। প্রথম ধাপের ভোটের পর ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে সিইসি বলেছিলেন, সেদিন সকালে বৃষ্টি হয়েছিল এছাড়া তখন ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে।

সেই দুই কারণ না থাকার পরও দ্বিতীয় ধাপে ভোটার খরা কেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ৩০ শতাংশ ভোটকে কখনোই খুব উৎসাহব্যঞ্জক মনে করি না। ভোটের হার কম হওয়ার একটা প্রধানতম কারণ হতে পারে দেশের একটা বড় রাজনৈতিক দল প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ভোট বর্জন করেছে এবং জনগণকে ভোট প্রদানেও নিরুৎসাহিত করেছে। যেকোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এ ধরনের চেষ্টা হতে পারে। পক্ষ বিপক্ষ থাকতে পারে।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের ভোট নিয়ে কোনো সংকট নেই। সংকটটি হচ্ছে রাজনীতিতে। আমি মনে করি, রাজনীতি যদি আরও সুস্থ ধারায় প্রবাহিত হয়, ভবিষ্যতে হয়তো ভোটার স্বল্পতার যে সমস্যাটুকু এগুলো কাটিয়ে উঠবে।

সিইসি আশা করেন, রাজনীতিতে যে সংকটটা রয়েছে সেটা অবশ্যই একটা সময় কাটিয়ে ওঠা যাবে এবং সুস্থ ধারায় দেশের সামগ্রিক রাজনীতি প্রবাহিত হবে। তিনি বলেন, ভোটারেরা তখন উৎসাহিত হবেন। ভোট আরও উৎসাহব্যঞ্জক হবে।

তবে ভোটার উপস্থিতি কম হলেও নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, নির্বাচনে সহিংসতার তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে দু-এক জায়গায় হাতাহাতি হয়েছে। এসব ঘটনায় এক থেকে দুজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কিন্তু নির্বাচনকে ঘিরে উল্লেখযোগ্য সহিংসতা হয়নি। নির্বাচন মোটামুটি ভালো এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রশাসন আন্তরিক ছিল জানিয়ে সিইসি বলেন, যেখানে অনিয়ম হয়েছে, ভোট কারচুপির চেষ্টা হয়েছে সেখানেই হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। মোট ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১০ জনকে তাৎক্ষণিক কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, জালভোট দেওয়ার জন্য। দুজনের মৃত্যু হয়েছে, তবে এটা ভোটকে কেন্দ্র করে নয়। অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। তিনি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

ষষ্ঠ উপজেলা ভোটে দেশের মোট ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হচ্ছে এবার। পরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বাকিগুলোয় ভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় ভোট হয় ৮ মে। এসব উপজেলায় গড়ে ৩৬ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পড়ে।

এর মধ্যে প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২৪ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি; বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হবে। ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ও ৫ জুন চতুর্থ ধাপের ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *