কোর্টে গিয়ে ভোটাধিকার ফিরে পেলেন চট্টগ্রাম শিল্পকলার ৫১ সদস্য
আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নির্বাচনের চারদিন আগে ভোটাধিকার ফিরে পাচ্ছেন চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমীর অর্ধশতাধিক সদস্য। হঠাৎ করে বসিয়ে দেওয়া দুই বছরের চাঁদা অনাদায় থাকার অজুহাতে ভোটারতালিকা থেকে তাদের নাম কাটা গিয়েছিল।
মোহাম্মদ আলী নামের এক সদস্যের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৩ জুন) বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছেন।
আগামী ৮ জুন চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দুটি করে পদ এবং তিনটি কার্যকরী সদস্য পদে ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে।
জানা গেছে, গঠনতন্ত্রের ২এর-ঙ এবং ৪এর-ক ধারা লঙ্ঘন করে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে তড়িঘড়ি করে ছয় বছরের সদস্য চাঁদা একসাথে পরিশোধের তারিখ নির্ধারণ করা হয়— যা সদস্যদের জন্য আর্থিক চাপ তৈরি করে। ঈদ-ঊল-ফিতরের ব্যস্ততা এবং সরকারি বন্ধের সময় ৪ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে সদস্যদের চাঁদা পরিশোধ করতে বলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় চাঁদা পরিশোধ করতে না পারার অজুহাতে ১১২ জন সদস্যের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এমন ঘটনায় চট্টগ্রামের সংস্কৃতি অঙ্গনে ক্ষোভের জন্ম হয়। এর মধ্যেই গত ১৪ মে নতুন সংস্কৃতিকর্মীদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পর চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণা ও সদস্যপদ নবায়নের দাবিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন শিল্পকলা একাডেমির অর্ধশতাধিক সদস্য।
কিন্তু চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারের মাধ্যমে জানান, নির্বাচনের আগে সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। এমন বক্তব্য আসার পর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর ৫১ জন সদস্যের পক্ষে মোহাম্মদ আলী হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটের পুরো বিষয়টি মনিটরিং করেন শিল্পকলা একাডেমীর সদস্য মোহাম্মদ সাজ্জাত হোসেন। চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘একটা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিলো ঈদুল ফিতরের বন্ধের সময়টাতে। অনেক ভোটার এই বিষয়টি জানতো। এরপর তাড়াহুড়া করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। অনেকেই ভোটার তালিকায় নাম না দেখে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেন। জেলা প্রশাসক শিল্পকলার কালচারাল অফিসারের মাধ্যমে জানান— নির্বাচন হয়ে যাক আগে, এরপর বাকিদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পরে ৫১ জন সদস্যের পক্ষে মোহাম্মদ আলী নামের একজন সদস্য হাইকোর্টে রিট করেন। পুরো বিষয়টি আমি মনিটরিং করি। আদালত এই ৫১ জনকে ভোটাধিকার প্রদানের জন্য রুল দিয়েছেন। এবং যে তালিকা করা হয়েছে এদের বাদ দিয়ে, সেটা বেআইনি বলে ঘোষণা করেছেন।’