বড় হার দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শেষ করলো বাংলাদেশ
ঘরের মাঠে লেবাননের বিপক্ষে প্রথম লেগে ১-১ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচের অনুপ্রেরণা নিয়ে কাতারের খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় লেগে জয়ের স্বপ্নে মাঠে নেমেছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা।
তবে নিজের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে একাই ধসিয়ে দিয়ে গেলেন লেবাননের অধিনায়ক হাসান মাতুক। তার হ্যাটট্রিকে বাংলাদেশ হেরেছে ৪-০ গোালে।
ম্যাচের শুরুতেই লেবাননকে পেনাল্টি উপহার দেয় বাংলাদেশ। লেবাননের কর্নার নেয়ার সময় অহেতুক ফাউল করেন শাকিল হোসেন। মালয়েশিয়ান রেফারি রাইজাল পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি হাসান মাতুক।
গোল হজম করার পরে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোলের চেষ্টা করছিলেন হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা। তবে লেবাননের রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে পারেননি রাকিব-মোরসালিনরা। বরং ক্ষণে ক্ষণে বাংলাদেশের রক্ষণের কঠিন পরীক্ষা নিচ্ছিলেন লেবাননের ফুটবলাররা।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে (৪৭) ব্যবধান দ্বিগুণ করে লেবানন। নাসারের বাড়ানো ক্রস বক্সের মধ্যে পেয়ে যান নাদের মাতার। তার সামনে ছিলেন শাকিল হোসেন, পেছনে তপু বর্মণ। তবে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়েই টপ কর্নারে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। কিছুই করার ছিল না মিতুল মারমার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পিছিয়ে পরে বাংলাদেশ। ৫০ মিনিটে দলের তৃতীয় এবং নিজের দ্বিতীয় গোল করেন হাসান মাতুক। করিম দারবেশের কাটব্যাক থেকে প্লেসিং শটে বল জালে জড়াান তিনি ঘরের মাঠে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স যতটাই দুর্দান্ত ছিল; আজ অ্যাওয়ে ম্যাচে ছিল ততটাই বিবর্ণ। পুরো ম্যাচে বাংলাদেশের কোনো পরিকল্পনাই কাজে লাগেনি।
৫৮ মিনিটে গোলের সেরা সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তিন ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে ব্যাক পাস দিয়ে রাকিবকে বল দেন মোরসালিন। ফাঁকায় থাকা রাকিবের শট ক্রসবারে উপর দিয়ে যায়।
৬০ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন হাসান মাতুক। বক্সে ঢুকে ডান পায়ের জোরালো কোনাকুনি শটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। হ্যাটট্রিক করেই মাঠ ছাড়েন ১৮ বছর ধরে খেলা এই ফরোয়ার্ড। এরই সঙ্গে ক্যারিয়ারে শেষ ম্যাচটিও খেলে ফেললেন। সতীর্থরা দারুণ সম্ভাষণ জানিয়ে বিদায়টা স্মরণীয় করে রাখলেন।
হার যখন নিশ্চিত তখন ম্যাচে বেশ কিছু পরিবর্তন এনে দল নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে দেখলেন কোচ কাবরেরা। জামালের বদলে মাঠে নামেন শাহরিয়ার ইমন। উইং দিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন তিনি। তবে সফল হতে পারেননি। শেষের দিকে বিশ্বনাথ ঘোষ, কাজেম শাহ ও রফিকুল ইসলাম নামেন। তবে তাতে কোনো লাভ হয়নি। বরং ১৩ বছর পর আবারও লেবাননের কাছে বড় হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশকে। এর আগে ২০১১ সালের ২৩ জুলাইয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে লেবাননের কাছে ৪ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল বাংলাদেশ।
হারলেও পুরো ম্যাচেই বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে গেছেন স্টেডিয়ামে উপস্থিত সমর্থকরা। দল ৪-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পরও পুরাটা সময়ই তারা গলা ফাটিয়েছেন প্রিয় দলের জন্য। এই ম্যাচে পাওয়া না পাওয়ার হিসেব কষলে শুধু সমর্থকদের ভালোবাসাই যোগ হবে বাংলাদেশের প্রাপ্তির খাতায়।