চট্টগ্রাম

অঝোরে কাঁদলেন নিহত দুই চুয়েট শিক্ষার্থীর বাবা

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শিক্ষার্থী শান্ত সাহার বাবা কাজল সাহা। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে আর্থিক সহায়তার চেক নিতে এসেছিলেন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে।

ছেলের কথা বলতে গিয়েই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন। কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না তার সমস্ত আশার বাতিঘর আর নেই।

বক্তব্য দিতে গিয়ে একই অবস্থা নিহত আরেক শিক্ষার্থী তাওফিক হোসেনের বাবা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের। তিনিও কথা বলার শুরুতেই কেঁদে উঠেন। কথা বলতে গিয়ে বার বার থমকে যান। মর্মান্তিক সেদিনের কথা ভুলতে পারছিলেন না।

দুজনই একটু কথা বলেন এরপর আবার কেঁদে উঠেন। এমন পরিস্থিতিতে সার্বক্ষণিক খবরাখবর রাখায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানকে।

সন্তানহারা দুই পিতাই অনুরোধ জানিয়েছেন যেন চুয়েট সড়ক অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে স্থাপনা নির্মাণে তাদের ছেলেদের নামে নামকরণ করা হয়। মন চাইলে যেন ছেলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান দেখে আসতে পারেন।

এ সময় নিহত শিক্ষার্থী শান্ত সাহার পিতা কাজল সাহা বলেন, আমার তৃতীয় সন্তান সে। আমাদের খুব আশা ছিল তাকে নিয়ে। কিন্তু হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে আমার পরিবার একেবারে ভেঙে পড়েছে। সৃষ্টিকর্তার সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিয়েছি। আমার ছেলেকে তো আর ফিরে পাবো না। কিন্তু আমাদের একটা ইচ্ছে তৌফিক এবং শান্তর নামে চুয়েটে কোনো কিছুর যদি নামকরণ করা যায়, তাহলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকতাম। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সক্রিয় ছিল আমার ছেলে। আজ আমার ছেলেই সে সড়কে লাশ হয়ে গেল।

নিহত তৌফিকের পিতা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, কিছু বলার ভাষা আমার নেই। একজন সন্তান হারা পিতা। আমার খুব আদরের সন্তান তাওফিক। তার কোনো দাবি অপূর্ণ রাখিনি। যখন যা চেয়েছে নিজের সাধ্যের মধ্যে সবকিছুই দিয়েছি। কিন্তু আজ আমার ছেলে নেই। সবসময় একটা শূন্যতা কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো স্থাপনা যেন আমাদের ছেলের নামে করা হয়। অনুরোধ রাখছি।

এ সময় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, নিহত দুই শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও তাওফিক হোসেনের নামে এ সড়কের নামকরণ করা যায় কিনা আমরা সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগকে প্রস্তাবনা পাঠাবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *