পার্বত্য চট্টগ্রাম

পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু ও মাতামুহুরীতে অস্বাভাবিক পানি

কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

গত শনিবার থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় শিক্ষার্থী, কর্মজীবী পেশাজীবী মানুষকে কর্মস্থলের জন্য বের হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এদিকে, জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘটেছে পাহাড়ধসের ঘটনাও। সোমবার সকালে বান্দরবান-রুমা সড়কের বেতছড়া পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন খুমী পাড়া এলাকায় পাহাড় ধ্বসে বন্ধ হয়ে গেছে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। তবে স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে মাটি সরিয়ে ফেলায় ছোট যান চলাচল করেছে।

অন্যদিকে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বৃষ্টিতে কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। জেলা শহরের ক্যচিংঘাটা, আর্মি পাড়া, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী বাজারসহ অলিগলি সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা।

জেলায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় ৪০ হাজার পরিবার। এরমধ্যে জেলা সদরের কালাঘাটা, কাসেমপাড়া, ইসলামপুর, বনরূপাপাড়া, হাফেজঘোনা, বাসস্টেশন এলাকা, স্টেডিয়াম এলাকা, নোয়াপাড়া, কসাইপাড়া।

রুমা উপজেলার হোস্টেলপাড়া, লামা উপজেলার হরিণমারা, ইসলামপুর, গজালিয়া, মুসলিমপাড়া, চেয়ারম্যানপাড়া, হরিণঝিড়ি, টিঅ্যান্ডটি এলাকা, সরই, রূপসীপাড়া, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উত্তরপাড়া, বাইশফাঁড়ি, আমতলী, রেজু, তুমব্রু, হেডম্যানপাড়া, দৌছড়ি, বাইশারীসহ সাত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি পরিবারের অপরিকল্পিত বসবাস রয়েছে। এর ফলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম আসলেই পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো. শামসুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিনের টানা বর্ষণে পাহাড়ধস এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি। পৌর এলাকায় ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দীন বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা আছে। ৭ উপজেলায় ২০৭টি স্কুল আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা সব বসবাসকারীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ইতোমধ্যে প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনওকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *