চট্টগ্রাম

মধ্য জুলাইয়ে ফিরবে ‘সামিট’, বাড়বে এলএনজি সরবরাহ

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল ‘সামিটে’র সংস্কারকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ত্রুটি সারিয়ে আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে এই টার্মিনাল দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি রিগ্যাসিফিকেশন ক্যাপাসিটির টার্মিনালটি অপারেশনাল কাজে যুক্ত হলে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ প্রায় দ্বিগুণ হবে। এতে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিদ্যমান গ্যাস সংকট কিছুটা কমবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দীন পূর্বকোণকে বলেন, সিঙ্গাপুরে সামিটের এলএনজি টার্মিনালের সংস্কারকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমরা আশা করছি ত্রুটি সারিয়ে আগামী ১২ থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এটি দেশে ফিরবে। এরপর অপারেশনাল কাজে যুক্ত হয়ে এলএনজি সরবরাহ শুরু করবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে আমদানি করা এলএনজি কার্গো কক্সবাজারের মহেশখালী এলাকার অদূরে বঙ্গোপসাগরে স্থাপন করা দুই ভাসমান টার্মিনাল দিয়েই খালাস করা হয়। এর একটি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির ‘এক্সিলেন্স’। অন্যটি দেশীয় সামিট প্রাইভেটের মালিকানাধীন ‘সামিট’। এ দুই টার্মিনালের দৈনিক রিগ্যাসিফিকেশন ক্যাপাসিটি ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটের কাছাকাছি।

তবে গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে একটি ভাসমান পন্টুন এসে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান সামিটের ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটে (এফএসআরইউ) আঘাত করে। এতে একটি এফএসআরইউর ব্যালাস্ট ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে ওই টার্মিনাল দিয়ে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। দুই টার্মিনালের একটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।

দেশে কূপ ও এলএনজি টার্মিনাল দিয়ে গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা দৈনিক ৩ হাজার ৮২৯ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে জাতীয় গ্রিডে মিলতো দৈনিক ৩ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের কিছু বেশি। এর মধ্যে সামিটের টার্মিনাল থেকে দৈনিক প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে মোট গ্যাস সরবরাহ ২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে আসে। ফিরিয়ে দেয়া হয় কয়েকটি কার্গো। দেশে শুরু হয় গ্যাস সংকট।

অন্যদিকে, পুরোপুরি এলএনজি নির্ভর চট্টগ্রামে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। মিলতো দৈনিক ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটের কাছাকাছি। সামিটের টার্মিনাল দিয়ে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার পর এখন মিলছে দৈনিক ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের কিছু বেশি। এতে সার কারখানা সিইউএফএল এবং রাউজান, শিকলবাহা ও বাড়বকুণ্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের সংকট চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *