কর্ণফুলীতে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার আরও ৩
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মামলার তিন পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সোমবার (৮ জুলাই) রাতে নগরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন— মো. সোলায়মান (২৩), মো. রাজু (২৪) এবং মো. নাজমুল প্রকাশ সাকমান (২০)।
র্যাব জানায়, ভুক্তভোগী কিশোরী (১৮) কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার বাসিন্দা। তিনি গত ১৮ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী এলাকায় বড় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে পেকুয়া থেকে বাসযোগে মইজ্জ্যারটেক মোড় এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে জনৈক মাহিন্দ্রা চালক মো. শওকতের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে, ভিকটিম গার্মেন্টসে চাকরি এবং বাসা ভাড়া নিয়ে থাকার জন্য মাহিন্দ্রা চালক মো. শওকতের কাছে সাহায্য চায়। শওকত ভিকটিমকে গার্মেন্টসে চাকরির আশ্বাস দিয়ে কর্ণফুলীর শিকলবাহা এলাকায় বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য বলে। পরে মাহিন্দ্রা চালক শওকত ও তার সহযোগীরা ভিকটিমকে সঙ্গে নিয়ে পায়ে হেঁটে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কর্ণফুলীর শিকলবাহা এলাকায় বাসা খোঁজাখুঁজি করে।
র্যাব আরও জানায়, এক পর্যায়ে, রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা বেল্লাপাড়া মোড়ে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে অবস্থানরত ৭ জন দুষ্কৃতিকারী মাহিন্দ্রা চালক মো. শওকত এবং তার বান্ধবী বিলকিছ আক্তার ও বন্ধু ইমনকে মারধর করে। পরে জোরপূর্বক ভিকটিমকে অটোরিকশায় তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় বিলকিছ আক্তার মইজ্জ্যারটেক মোড় এলাকায় গিয়ে পুলিশকে ঘটনার বিষয়ে জানালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কর্ণফুলীর মহিউদ্দিন চৌধুরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছন থেকে আসামি মোহাম্মদ আকাশকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় অসুস্থ অবস্থায় ভুক্তভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ওসিসিতে (ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) ভর্তি করা হয়। পরে এ ঘটনায় ভিকটিমের খালা বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র পরিচালক (মিয়িয়া) মো. শরীফ-উল-আলম বলেন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত থাকে। গোপন সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় ৩ নম্বর পলাতক আসামি মো. সোলায়মান কর্ণফুলীর শাহ্ আমানত টোল প্লাজা এলাকায় অবস্থান করছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে, মইজ্জারটেক এলাকা থেকে রাজু ও নগরের কালামিয়া বাজার থেকে নাজমুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আসামিরা জানায়, তারা মামলা দায়েরের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে চট্টগ্রাম জেলা এবং নগরের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্ণফুলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।