রাজধানীর থানাগুলোতে ফিরতে শুরু করেছে পুলিশ
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরকার পতনের পরে বিক্ষুব্ধ মানুষের রোষানলের শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। ভাঙচুর করা হয় বাহিনীটির গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও থানা।
সহিংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে অনেকেই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা কর্ম বিরতিতে চলে যান। তবে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ফিরতে শুরু করেছে পুলিশ সদস্যরা। কয়েকটি থানায় শুরু হয়েছে কার্যক্রম।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পল্লবী থানা, মিরপুর মডেল থানা ও রূপনগর থানা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
এদিন সরেজমিনে পল্লবী থানা ঘুরে দেখায়, থানার নিরাপত্তার জন্য দায়িত্ব পালন করছিল আর্মিরা। থানাটির ৬ তলা ভবনে সবকটি গ্লাস ভাঙ্গা। হয়েছে লুটপাট। তবে থানায় আগুন দেওয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শ (এসআই) বলেন, আমাদের থানার কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মস্থলে ফেরত আসছে। আমরা দ্রুত থানার কার্যক্রম শুরু করব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের থানায় ব্যাপক ভাঙচুর ও লুট হয়েছে।
অন্যদিকে মিরপুর মডেল থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানা তিনতলা ভবনের পুরোটাই পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। পুরা যেন একটা ধ্বংস স্তূপে পরিণতি হয়েছে। আর্মি আর ছাত্ররা থানা থেকে ঘিরে রেখেছে। এদিন সিভিল পোশাকে দেখা যায় মডেল থানার এসআই, কনস্টেবল ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। থানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান থানার সমস্ত নথিপত্র, অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীর জিনিসপত্র কম্পিউটার সার্ভার সিসি ক্যামেরা থেকে শুরু করে অস্ত্রসহ লুট করা হয়।
কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সী সাব্বির আহম্মেদ বলেন, আমাদের থানাটি পুরা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দেখতেই পারছেন কিচ্ছু নেই। দুষ্কৃতকারীরা সবকিছু পুড়িয়ে দিয়েছে ও লুট করেছে।
কবে থেকে কার্যক্রম শুরু হবে জানতে চাইলে ওসি মুন্সী সাব্বির বলেন, আজকে বিকেল থেকেই আমাদের কার্যক্রম ম্যানুয়ালি শুরু হয়েছে। পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হতে সময় লাগবে। আমাদের থানার অর্ধেক কর্মকর্তা কাজে যোগদান করেছে বাকিরা আসছেন।
এদিকে রূপনগর থানায় গিয়ে নিম্ন চিত্র দেখা যায়। থানার বাইরে এবং ভেতরে হয়নি ভাঙচুর। অক্ষত রয়েছে থানা ভবন। তবে থানার ৯টি কম্পিউটার ও নথিপত্র লুট হয়েছে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত থানার সামনে আর্মিদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ বাংলানিউজকে বলেন, আমার থানায় কোনো ভাঙচুর হয়নি। তবে কম্পিউটার, হুন্ডা, সরকারি নথি ও সিসি ক্যামেরা দুষ্কৃতকারীরা লুট করে নিয়ে যায়।
থানার কার্যক্রম কবে থেকে শুরু হবে জানতে চাইলে ওসি বলেন, আজকে থেকেই আমরা থানার কার্যক্রম মেনুয়্যালি শুরু করেছি। এরই মধ্যে আমার থানায় ১২৩ জনের মধ্যে মোট ৩১ জন কাজে যোগদান করেছেন।
এর আগে, বেশ কয়েকদিন ধরে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক দফা দাবির মুখে সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তী সরকার শপথ গ্রহণ করে।