অপচনশীল পলিথিন বর্জ্য দাম পাচ্ছে চট্টগ্রামে
ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও প্রতিদিনের বাজারের সঙ্গে ঘরে ঢুকছে পলিথিন। ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর হয়ে সেই পলিথিনই যাচ্ছে ঘরের বাইরে। চট্টগ্রাম নগরে অনেক বর্জ্য অসংগৃহীত থেকে যায় বলে ড্রেন, ডোবা-নালার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশণের পথে বাধা সৃষ্টি করে প্লাস্টিক আর পলিথিন। তাতে বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।
এ পরিস্থিতি বদলাতে বর্জ্য সংগ্রহকারী ও ব্যবসায়ীদের বাড়তি প্রণোদনা দিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় ব্যবহৃত প্লাস্টিকের সঙ্গে ফেলে দেওয়া পলিথিন সংগ্রহ করে সেগুলো বিক্রি করা যাচ্ছে। এসব কেনা-বেচায় পাওয়া যাচ্ছে আর্থিক প্রণোদনা। তাতে করে প্লাস্টিক ও পলিথিন বেচে আয় বেড়েছে বর্জ্য সংগ্রহকারীদের।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সহায়তায় নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে চট্টগ্রামের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইয়ং পাওয়ার ইন সোস্যাল অ্যাকশন (ইপসা) এ কাজটি পরিচালনা করছে। বর্জ্য ব্যবস্থপনায় গত ২২ জুন তিন পক্ষের মধ্যে চুক্তিও হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বর্জ্য সংগ্রহের জন্য প্রতিটি বাড়িতে লাল, হলুদ ও সবুজ রঙের ড্রাম রাখা আছে। এসব ড্রামে পচনশীল, প্লাস্টিক ও পলিথিনের মত অপচনশীল বর্জ্য আলাদা আলাদা করে রাখা হয়। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় সিটি করপোরেশনের বর্জ্য সংগ্রহকারীরা তা নিয়ে যান।
পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য রাখার জন্য আলাদা আলাদা ড্রামের ব্যবস্থা করায় অনেকেই এখন বর্জ্য আলাদা করে ড্রামে ফেলছেন। প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য নিয়ে আমাদের মধ্যে সচেতনতা এসেছে। নগরীর তালিকাভুক্ত প্লাস্টিক ও পলিথিন সংগ্রহকারীরা বর্জ্য বিক্রির সময় প্রতি কেজিতে দুই টাকা এবং এসব বর্জ্য কিনলে ভাঙারি দোকানি কেজিতে এক টাকা করে প্রণোদনা পাচ্ছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২০০ ভাঙ্গারি দোকান এবং ২ হাজার ৪০০ জন বর্জ্য সংগ্রহকারী প্রতিমাসে এই প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, বন্দর নগরীতে প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার টন কঠিন বর্জ্য উৎপাদন হয়, যার মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য প্রায় ২৪৯ টন। এসব বর্জ্যের ৫৬ শতাংশ অসংগৃহীত থেকে পরিবেশের সঙ্গে মিশে যায়। এসব বর্জ্য নগরীর পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে।
“প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সিটি করপোরেশন কাজ করছে। তবে ইউনিলিভার ও ইপসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এই কাজকে তরান্বিত করেছে।”