হাটহাজারীতে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত
হাটহাজারী উপজেলায় টানা ভারি বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে ব্যাপক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে, ফলে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পূর্ব মেখল খোয়াজ চৌধুরী বাড়ির সামনে থেকে মেখল মাদ্রাসা রোড এবং ইছাপুর ফয়জিয়া বাজার থেকে মুফতি ফয়জুল্লাহ সড়ক পুরোপুরি পানির নিচে চলে গেছে। ফলে দক্ষিণ মেখল, গড়দুয়ার, পূর্ব মেখল বাদামতল, কামদরআলী হাট, গড়দুয়ারা জোর পুকুর, লোহারপুল, উত্তর মাদার্শা সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ড. শহীদুল্লাহ একাডেমি, মোহাম্মদপুর, ছিপাতলী, গুমাণমর্দ্দন, নাঙ্গলমোড়া সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। পৌরসভার মুন্দরীছড়ার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে ৮ নং ওয়ার্ডের মিরেরখীল গ্রাম এবং মীর রোড প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়া ফরহাদাবাদ, ধলই, মির্জাপুর, ছিপাতলী, নাঙ্গলমোড়া, গুমানমর্দ্দন, গড়দুয়ারা, দক্ষিণ মাদার্শা, শিকারপুর, বুড়িশ্চর ও হাটহাজারী পৌরসভার কিছু কিছু এলাকাও বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ফলে বাড়িঘর ও যাতায়াতের সড়ক পানির নিচে থাকায় দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষজন বিপাকে পড়েছেন। বন্যার পানিতে আমন ধান ও মৎস্য খামার-পুকুর তলিয়ে গেছে।
উপজেলার ১২ নং চিকনদন্ডী ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃঞ্চ নাথ জানান, প্রবল বর্ষণে ফতেয়াবাদ সত্যানন্দ মঠ তথা সাধুর পাহাড়ের মন্দিরে ধস দেখা দিয়েছে। মন্দিরটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মির্জাপুর ইউপির সাবেক মেম্বার রুপেন কুমার শীল জানান, কুমারী খালের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে লোকালয়ে পাহাড়ি ঢল ঢুকেছে।
এনায়েতপুর এলাকার কৃষিজীবি অহিদুল আলম জানান, তার ১২ কানি জমির রোপা আমন চারা পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে আসা দুর্গতদের খাওয়া-দাওয়া এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত ২০টি আশ্রয় কেন্দ্র এবং ২০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ বি এম মশিউজ্জামান জানান, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে আসেনি।