চট্টগ্রামবন্দর

সাবেক এমপিদের বিলাসবহুল গাড়ি বন্দরে আটকে

সাবেক সংসদ সদস্যদের (এমপি) নামে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ৫২টি বিলাসবহুল গাড়ি বন্দরে আটকে রয়েছে। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, টয়োটা জিপ, টয়োটা এলসি স্টেশন ওয়াগন মডেলের এই গাড়িগুলোর বেশিরভাগই জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল হয়ে যায়। ফলে এখন এই গাড়িগুলো খালাস করতে চাইলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের হিসাবে ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক পরিশোধ করতে হতে পারে।

জাতীয় সংসদের সদস্যরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুযোগ পান। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সংসদ সদস্যদের গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হলেও তা গৃহীত হয়নি।

এই ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্যরা বিপাকে পড়েছেন। তাদের এখন বিপুল পরিমাণ শুল্ক দিয়ে গাড়ি খালাস করার বা গাড়িগুলো বন্দরেই রেখে দেওয়ার মধ্যে একটি পছন্দ করতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় নিয়ে আসা গাড়িগুলো আমদানি করেছেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও নেত্রকোনার সাবেক এমপি সাজ্জাদুল হাসান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এস এ কে একরামুজ্জামান, ফয়জুর রহমান, সিরাজগঞ্জের চয়ন ইসলাম ও জান্নাত আরা হেনরি, নাটোরের আবুল কালাম ও সিদ্দিকুর রহমান পাটওয়ারী, বগুড়ার মজিবুর রহমান মঞ্জু ও রেজাউল করিম তানসেন, টাঙ্গাইলের অনুপম শাহজাহান জয়, হবিগঞ্জের ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সুনামগঞ্জের রনজিৎ সরকার ও ড. সাদিক, গাইবান্ধার আবুল কালাম আজাদ, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সাবেক এমপি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, যশোরের নওয়াব আলী জোয়ার্দার, ঝিনাইদহের মো. নাসের শাহরিয়ার জাহিদি, লক্ষ্মীপুরের মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং দিনাজপুরের মুহাম্মদ জাকারিয়া।

এ ছাড়া সাবেক এমপিদের মধ্যে গাড়ি আমদানি করেছেন আব্দুল মোতালেব, মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, শাহ সরওয়ার কবির, এবিএম আনিসুজ্জামান, সাদ্দাম হোসাইন পাভেল, এস এম আল মামুন, আক্তারুজ্জামান, মো. সাইফুল ইসলাম, এস এম কামাল হোসেন, মাহমুদ হাসান রিপন, মুজিবুর রহমান, এস এম আতাউল হক, মাহমুদুল হক সায়েম, মো. মতিউর রহমান, মো. তৌহিদুজ্জামান, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ ও সিদ্দিকুল আলম। এ ছাড়া সংরক্ষিত আসনে সদস্যদের মধ্যে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করেছেন তারানা হালিম, সানজিদা খানম, নাসিমা জামান ববি, খালেদা বাহার বিউটি, রুনু রেজা ও সাহিদা তারেক দিপ্তি।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান জানিয়েছেন, বর্তমানে সংসদ বহাল না থাকায় সাবেক সংসদ সদস্যদের নামে আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়িগুলো আর শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে না। এই গাড়িগুলো খালাস করতে হলে আইন অনুযায়ী নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সরকার সংসদ সদস্যদের জন্য শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা চালু করেছিলেন। ১৯৮৮ সালের ২৪ মে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *