চট্টগ্রামফটিকছড়ি

ফটিকছড়ির বালুখালীতে বন ধ্বংস: টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রকৃতি

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট রেঞ্জের বালুখালী বিটের সংরক্ষিত বনে দিন দিন ঘরবাড়ি ও দোকানপাট নির্মাণের প্রবণতা বাড়ছে। বনের গাছ কেটে এসব নির্মাণকাজ অবাধে চলছে, ফলে বনভূমি দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে টাকার বিনিময়ে এসব ঘটছে।

বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসব বনভূমি তদারকিতে উদাসীন থাকায় স্থানীয় বন বিভাগের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। বনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই এসব কর্মকাণ্ডের পেছনে রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, ওই রেঞ্জের আওতাধীন বালুখালী বনবিট কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দিন যোগদানের পর থেকে রেকর্ড সংখ্যক বনভূমি বেদখল হয়েছে। যদিও বন বিভাগ এ ব্যাপারে কোনো সঠিক হিসাব দিতে পারেনি। ওই বিটের আওতাধীন মোট ১২,৫০০ একর বনভূমি রয়েছে।

সরেজমিনে ওই এলাকায় গেলে স্থানীয়রা জানান, বালুখালী বিটের নতুন পাড়া এলাকায় আলম সওদাগর নামে এক ব্যক্তি ২৫ হাজার টাকা দিয়ে ৫৫টি পিলারের ওপর একটি বসতবাড়ি নির্মাণ করছেন। শ্বেতছড়া বাজারের পাশে ১০ হাজার টাকায় আরেকটি বসতঘর গড়ে উঠছে। ধইল্যারখীল এলাকায় ইলিয়াছ নামের এক ব্যবসায়ী ১৫ হাজার টাকা দিয়ে দোকান নির্মাণ করছেন। তাছাড়া, শ্বেতছড়া বাজার এলাকায় আবদুল মালেক নামের এক ব্যক্তি ৫টি দালান নির্মাণ করতে গিয়ে একটি শতবর্ষী বটবৃক্ষ কেটে ফেলেছেন। অথচ বন বিভাগ এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয়রা বন কর্মচারীদের সহায়তায় এসব নির্মাণকাজ করছে।

অভিযোগ উঠেছে, বালুখালী বিট কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দিন এবং বনপ্রহরী (গার্ড) আবদুল্লাহ আল বাকী স্থানীয়দের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বসতবাড়ি ও দোকান নির্মাণের মৌখিক অনুমতি দিয়ে থাকেন। এলাকাবাসী এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন।

আলম সওদাগর ঘর নির্মাণের বিষয়ে বলেন, “স্থানীয়রা আগে থেকেই ঘর তুলেছেন। তাই তিনিও তুলছেন। বনপ্রহরী আবদুল্লাহ আল বাকী তাকে মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন।”

স্থানীয় শিক্ষক মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, “দীর্ঘদিন যাবত বনের জমিতে বসতি নির্মাণের প্রবণতা বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে সব বনই ধ্বংস হয়ে যাবে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দারা বলেন, প্রতিনিয়ত বনে নতুন নতুন বসতি ও দোকানপাট নির্মাণ হচ্ছে। এসব নির্মাণ কাজের সঙ্গে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশ রয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

টাকা নিয়ে ঘর নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন বন প্রহরী (এফজি) আবদুল্লাহ আল বাকী। তিনি বলেন, “কেউ হয়তো ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে এমন অভিযোগ তুলেছেন।”

বালুখালী বিট কর্মকর্তা মো. আলাল উদ্দিন বলেন, “আমরা নিয়মিত তাদের বাধা দেই। কিন্তু তারা মানে না। বনে বসতবাড়িসহ কোনও ধরনের স্থাপনা নির্মাণের নিয়ম নেই।”

নারায়ণহাট রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বলেন, “আমি কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। সাম্প্রতিক বন্যার কারণে একটু সমস্যায় আছি। ঊর্ধ্বতনদের বিষয়টি জানিয়েছি। শীঘ্রই দখলদারদের বিরদ্ধে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *