পূর্বাঞ্চলে ১৩ কিলোমিটার রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত
বন্যার কারণে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে চারদিন বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। পানিতে বিভিন্ন রুটে প্রায় ৫৬ কিলোমিটার রেলপথ ডুবে যায়।
এ রেলপথের তিন রুটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৩ কিলোমিটার এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ মেরামত করতে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা লাগবে বলে জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশলীরা।
তারা বলেন, বন্যার কারণে ৫৬ কিলোমিটার রেলপথ পানিতে ডুবে যায়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চট্টগ্রাম-ঢাকা রেলপথের ফাজিলপুর থেকে কালীদহ হয়ে ফেনী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রেলপথ। এই ৭ কিলোমিটার রেলপথ পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। চট্টগ্রাম-ঢাকা, চট্টগ্রাম-নাজিরহাট, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, লাকসাম-নোয়াখালী রুটে প্রায় ৫৬ কিলোমিটার রেলপথ পানিতে ডুবেছিল। এর মধ্যে লাকসাম-নোয়াখালী ৪৯ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ১৫ কিলোমিটার রেলপথ এখনো পানির নিচে রয়েছে। সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এক লাইনে ট্রেন চলাচল করছে। অন্য লাইনটি মেরামত করা হচ্ছে। যার কারণে বন্ধ রয়েছে এ রুটের ১৫টি ট্রেন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ রাফি মো. ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম-ঢাকা রেলপথের ফেনীর মুহুরীগঞ্জ থেকে গুণবতী পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার রেলপথ ডুবেছিল। এর মধ্যে ফাজিলপুর-কালীদহ হয়ে ফেনী পর্যন্ত (চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী লাইন) সাড়ে ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার রেললাইন পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। এই রেল লাইনটি চারদিন পানির নিচে ডুবেছিল। রেল লাইনের পাথর-স্লিপারসহ প্রায়ই নষ্ট হয়েছে। এই ৭ কিলোমিটার রেললাইন আবার তৈরি করতে হবে। তবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী রেলপথটি ভালো আছে। এটার তেমন ক্ষতি হয়নি। ফাজিলপুর-কালীদহ হয়ে ফেনী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ মেরামতে ৩ কোটি টাকার মতো লাগবে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইনের মধ্যে জানালীহাট, পটিয়া ও কাঞ্চননগর এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটার রেললাইন পানিতে ডুবেছিল। এই রেললাইনে ক্ষতি হয়েছে। ষোলশহর-নাজিরহাট রুটে নাজিরহাটের শেষের দিকে ৫ কিলোমিটার রেললাইন পানিতে ডুবেছিল। এটা পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া এসব রেলপথের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা। লাকসাম-নোয়াখালী ৪৯ কিলোমিটার রেল লাইনের মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পানিতে ডুবে ছিল ১৫ কিলোমিটার। পানিতে ডুবে থাকার কারণে এই রেল লাইনের ক্ষয়ক্ষতি এখনও নির্ধারণ করা যায়নি।
বন্যার পানিতে ফেনীর ফাজিলপুর এলাকায় রেলপথ ডুবে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। চারদিন বন্ধ থাকার পর গত ২৬ আগস্ট রাত থেকে ঢাকা-চট্টগ্রামে সীমিত পরিসরে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। পরদিন ২৭ আগস্ট থেকে স্বাভাবিক সূচি অনুযায়ী সব ট্রেন চলতে থাকে। পরে বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হলে গত ২২ আগস্ট থেকে তিনদিন বন্ধ ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ট্রেন চলাচল। তিনদিন পর গত ২৪ আগস্ট কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এ রুটের বিভিন্ন স্থানে এখনো পানি জমে থাকায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামতের কাজ চলমান থাকায় একটি লাইন বন্ধ রয়েছে। যার কারণে এ রুটে বন্ধ রয়েছে ১৫টি ট্রেন চলাচল।