বিপ্লব উদ্যানকে ঘিরে জল্পনা কল্পনা
নগরীর বিপ্লব উদ্যান ঘিয়ে জল্পনা কল্পনার যেন শেষ নেই চট্টগ্রাম বাসীর। কোথাও প্রকৃতিবেষ্টিত ফাঁকা জায়গা দেখলে নগরকর্তাদের মানসচক্ষে প্রথমেই ভেসে ওঠে এর বাণিজ্যিক ব্যবহারের সম্ভাবনাটি। উন্নয়ন, জনকল্যাণ, আধুনিকায়ন বা সৌন্দর্যবর্ধন ইত্যাদি নামে নগরবাসীর স্বস্তি ও অবকাশের জায়গাটুকু কেড়ে নিতে তৎপর হয়ে ওঠেন তাঁরা।
সম্ভবত চট্টগ্রামের তিন-তিনবারের নির্বাচিত মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর হাতেই এ প্রক্রিয়ার শুরু। প্রয়াত এই নেতার বহু গণমুখী উদ্যোগের অকুণ্ঠ প্রশংসা করার পরও বলতে হবে, সিটি করপোরেশনের (চসিক) আয় বাড়ানোর জন্য যত্রতত্র বাণিজ্যিক ভবন ও বিপণিকেন্দ্র গড়ে তোলার তিনিই ছিলেন পথিকৃৎ।
তাঁর আমলে চসিকের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য এখনকার মতো বড় অঙ্কের বরাদ্দ দেওয়া হতো না বলে আয়বর্ধক প্রকল্প হিসেবে তাঁর এই উদ্যোগকে অনেকেই ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ২০১৫ সালে মেয়র নির্বাচিত হয়ে সারা শহর থেকে বিলবোর্ড অপসারণ করে জনসমর্থন ও প্রশংসা পেয়েছিলেন আ জ ম নাছির উদ্দীন। কিন্তু সৌন্দর্যবর্ধনের নামে ফুটপাতে বা ফাঁকা জায়গায় দোকানপাট নির্মাণের ক্ষেত্রে আগের সব রেকর্ডই ভঙ্গ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম–সংলগ্ন প্রায় পরিত্যক্ত এলাকাকে যখন তিনি ঝকঝকে রেস্তোরাঁপাড়া করে তুললেন, তখন তাঁর বাণিজ্যবুদ্ধি ও সৃজনশীলতা প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই এলাকার ফুটপাতও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের কারণে চলাচলের প্রায় অযোগ্য। কিছুদিন আগে জেলা প্রশাসনের অভিযানে এ রকম কিছু দোকানপাট ভেঙে ফেলা হয়েছে।
নগরের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত ষোলশহরের দুই একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা ‘বিপ্লব উদ্যান’–এর সুন্দর স্বস্তিকর পরিবেশকে ধ্বংস করার প্রথম পদক্ষেপটি ছিল তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের। ২০১৮ সালে দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অত্যন্ত অসংগত একটি চুক্তি সম্পাদন করেন তিনি।