চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের উন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে: জেলা প্রশাসক

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেছেন, চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সরকারি প্রত্যেক দপ্তরকে সংস্কারের আওতায় এনে মেধা, দক্ষতা ও সততা দিয়ে আমাদের কার্যক্রমগুলো সুনিশ্চিত করবো।

আমরা একটি পরিবার। যতদিন পর্যন্ত চট্টগ্রামে থাকবো, একটি পরিবার হিসেবে কাজ করতে চাই।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে যাদের প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের পরিষদের কার্যক্রমগুলো সুচারুভাবে করতে হবে। জণগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করতে হবে। ’

এ সময় তিনি উপজেলা পর্যায়ে ক্রীড়া সংস্থা ও বন্যা পুর্নবাসন কমিটি করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তালিকা জমা দিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

আনোয়ারা-বাশঁখালী প্রান্তে তৈলারদ্বীপ সেতু প্রসঙ্গে সওজের দক্ষিণ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, এ সেতু দিয়ে গাড়ি পারাপারে টোল আদায় করা হতো। এ সেতু থেকে সরকার বছরে ১০ থেকে ১১ কোটি টাকা রাজস্ব পায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ছাত্র সমন্বয়কদের আন্দোলনের কারণে এ সেতু পারাপারে আপাততঃ টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।

এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ডিসি বলেন, এ সেতুতে এক সময় টোল নেওয়া হতো। সরকারের রাজস্ব বাড়াতে গিয়ে দেশের যাতে ক্ষতি না হয় সে বিষয়টি দেখা জরুরি। এ জন্য ছাত্র সমন্বয়কদের সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন আলোচনা করবে এবং তৈলারদ্বীপ সেতুতে টোল আদায়ের বিষয়ে সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের কাছে চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চাওয়া হবে। জানমাল রক্ষায় কর্ণফুলী ও অন্যান্য স্থানে বন্য হাতির উপদ্রব রোধে বন বিভাগ, আইওসিআর ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বিত উদ্যোগের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।

সভায় জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দিদারুল আলম বলেন, জেলা পরিষদের সকল কার্যক্রম সুন্দরভাবে চলছে। কোনো প্রকল্পে যাতে অনিয়ম না হয় সে বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদারকি অব্যাহত রয়েছে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ নতুনভাবে কাজ শুরু করেছে। সকলের সহযোগিতা পেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতায় সর্বত্র লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গুর হট স্পট ভাগ করে রেড ও ইয়েলো জোন চিহ্নিত করে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। চট্টগ্রামে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৮১ জন, মৃত্যুবরণ করেছে ৭ জন ও গত আগস্ট মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০২ জন, মৃত্যুবরণ করেছে ২ জন। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মোহাম্মদ তাজবিল্লাহ বলেন, ‘কোনো ধরণের ভোগান্তি ও হয়রানি ছাড়াই গ্রাহকেরা পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে। তবে কোন রোহিঙ্গা নাগরিক যাতে এখানে এসে ভোটার হতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক রয়েছি। ’

সভায় পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, জেলার ১৫ উপজেলা ও নগরীর পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের কর্মস্থলে আগমন ও দায়িত্ব থেকে প্রস্থানের বিষয়টি অ্যাপসের মাধ্যমে নিয়মিত তদারকি করা হয়।

সমন্বয় সভায় জেলা খাদ্য অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, পরিসংখ্যান অফিস, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, রাবার বিভাগ, বন বিভাগ, সওজ, এলজিইডি ও জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাদি-উর রহিম জাদিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইনামুল হাছান, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা জান্নাত, বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান আলী, সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অয়ন কুমার ত্রিপুরা, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফখরুল আলম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *