বাংলাদেশ-রাশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ঐতিহাসিক
বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস আমাদের উভয় দেশের জন্যই একটি গৌরবের দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে সরকারি সফরের মধ্য দিয়ে এই ঐতিহাসিক সম্পর্কের যাত্রা শুরু হয়েছিলো। এরপর থেকে রাশিয়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। রাশিয়া বৃহৎ শিল্প ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা করেছিল।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসের ৫২তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা, মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকার পরিচালক পাভেল দভয়চেনকভ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউস, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি ট্রাস্ট যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. আবুল কালাম আজাদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজ মোহাম্মদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ মো. রফিকুল হক ও ইউনিভার্সিটি অফ গ্লোবাল ভিলেজ এর প্রাক্তন ভাইস-চ্যান্সেলর বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ জাহাঙ্গীর আলম খান।
অনুষ্ঠানে ৫২ জন রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নেপথ্য শিল্পী সৈনিকসহ ৮৪ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পাভেল দভয়চেনকভ বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা, বাণিজ্য প্রতিনিধিত্ব, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার বিষয়ে আন্তঃসরকারি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে তৎকালীন সোভিয়েত সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সোভিয়েত নৌবাহিনী চট্টগ্রাম বন্দর নিষ্ক্রিয় করে এবং বন্দরটিকে সম্পূর্ণরূপে চালু করে। সফরকালে বঙ্গবন্ধুর বিশেষ অনুরোধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী পূর্ণ সরকারি বৃত্তি নিয়ে রাশিয়ায় পড়তে যায়।
পরে তারা দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে সক্রিয় হন। তাদের মধ্যে ৬০০০ এরও বেশি সোভিয়েত এবং রাশিয়ান গ্র্যাজুয়েট বর্তমানে বাংলাদেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উচ্চ পদে কর্মরত এবং অধিষ্ঠিত।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে আলোচনা, সম্মাননা প্রদান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে মুক্তিযুদ্ধের গান, কবিতা পরিবেশনের পাশাপাশি উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা একাত্তরের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সম্মাননা প্রাপ্তিতে অনুভূতি প্রকাশ করেন।