ভবন মালিকের বিরুদ্ধে ঠিকাদারের মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
চট্টগ্রামে পাওনা টাকা পরিশোধ না করে উল্টো হুমকি প্রদানের অভিযোগে এক ঠিকাদারের করা মামলায় মো. রফিক নামে এক ভবন মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম বেগম রুমানা আক্তারের আদালত এই আদেশ দিয়েছেন বলে জানান বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান খান।
ভবন মালিক রফিক চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন গ্রীণভ্যালী ৬ নং সড়কের হাজী আমিরুজ্জামানের ছেলে।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০ ও ৫০৬(২) ধারায় চট্টগ্রামের একটি আদালতে মামলাটি দায়ের হয়।মামলায় অভিযোগ করা হয়, অভিযোগকারী আব্দুর রহমান পেশায় নির্মাণ কাজের ঠিকাদার। ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি বিবাদীর ঠিকানায় তার নির্মাণাধীন বাড়ির ৪র্থ তলা থেকে ৭ম তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজের জন্য অভিযোগকারীর সাথে একটি চুক্তি হয়।
চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ কাজের বিল হিসাবে প্রতি তলার জন্য প্রতি বর্গফুটের কাজের পারিশ্রমিক হিসাবে ২১৫ টাকা নির্ধারিত হয়। উল্লেখ্য, আসামীর নির্মাধীন ভবনের প্রতি তলার আয়তন ৩ হাজার ৪৭০ বর্গফুট। অভিযোগকারী প্রতি তলার নির্মাণ কাজ শেষ করা সাপেক্ষে ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৫০ টাকা প্রাপ্য হবেন।
নির্মাণকাজ চলাকালীন সময় আসামি অভিযোগকারীকে নির্মাণ কাজের অগ্রিম হিসাবে ১৬ দফায় সর্বমোট ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। অভিযোগকারী ইতিমধ্যে নির্মাণ কাজের প্রায় ৬০ শতাংশ সম্পন্ন করেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণ বশত নির্মাণ কাজ চলাকালীন অবস্থায় আসামী অভিযোগকারীকে না জানিয়ে এবং অভিযোগকারীর কোনো ধরনের পাওনা পরিশোধ না করে বাংলাদেশ থেকে প্রবাসে চলে যান।
অভিযোগকারী আসামির সাথে যোগাযোগ করলে আসামি অভিযোগকারীকে এই মর্মে আশ্বস্ত করেন যে, আসামি বাংলাদেশে আসলে পুনরায় নির্মাণকাজ শুরু করবেন। কিন্তু আসামি দেশে এসে অভিযোগকারীকে ঠকানোর উদ্দেশ্যে অভিযোগকারীকে তার পাওনা টাকা পরিশোধ না করে এবং অভিযোগকারীকে বাড়ির নির্মাণ কাজ প্রদান না করে অন্য ঠিকাদারকে নির্মাণ কাজ হস্তান্তর করেন।
পরবর্তীতে অভিযোগকারী তার নির্মাণ কাজের ৬০ শতাংশ বিল বাবদ পাওনা টাকা এবং আসামির বিশ্বাসভঙ্গের কারণে আসামির ভবনে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থেকে নষ্ট যাওয়া অভিযোগকারীর প্রায় ১ লাখ টাকার নির্মাণ সামগ্রীর ক্ষতিপূরণ, সর্বমোট ৩ লাখ ২ হাজার ৬৩০ টাকা ফেরত দাবি করিলে আসামি অভিযোগকারীকে তার পাওনা প্রদানে অস্বীকার করেন।
অভিযোগকারী তার পাওনা টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে গত ২ জানুয়ারি বায়েজিদ বোস্তামী থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন এবং ১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটির ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বরাবরে আবেদন করলেও আসামী অভিযোগকারীকে তার পাওনা টাকা প্রদানে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই।
পরবর্তীতে সর্বশেষ ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টার দিকে অভিযোগকারী আসামির বর্তমান ঠিকানায় গিয়ে তার পাওনা টাকা দাবি করলে আসামি অভিযোগকারীকে কোনো টাকা প্রদান করতে পারবেন না এবং পুনরায় টাকা দাবি করলে জানে মেরে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রতারণামূলকভাবে কাজ আদায় করে পাওনা টাকা প্রদান করা থেকে বিরত থেকেছেন বিবাদী। আরও অভিযোগকারীকে প্রাণে হত্যা করবেন জানিয়ে হুমকি-ধমকি প্রদান করেছেন। এই কারণে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০ ও ৫০৬(২) ধারায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে বায়েজিদ বোস্তামী থানাকে তদন্ত করতে আদেশ দিয়েছিলেন।