সরকারি পাহাড় বিক্রি করছে ‘রফিক বাহিনী’, অসহায় বন বিভাগ
বাঁশখালীতে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে রফিক বাহিনী। এই বাহিনীর হাত থেকে সরকারি পাহাড়, সংরক্ষিত বনের গাছ, বন বিভাগের লোকজন থেকে শুরু করে কেউ রেহাই পাচ্ছেন না। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুম শুরু হতে না হতেই বাঁশখালীতে শুরু হয় পাহাড় কেটে অবৈধ স্থাপনা তৈরি, পাহাড়ের মাটি বিক্রি, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গর্জন কেটে বিক্রি।
বন বিভাগ বলছে, বাঁশখালীর জঙ্গল পাইরাং এলাকার রফিক আহমদ পাহাড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। রফিকের নেতৃত্বে একের পর এক পাহাড় নিধন চলছে। বন বিভাগের কর্মকর্তারাও এই বাহিনীর কাছে অসহায়। রফিক বাহিনীর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ডজনখানেক মামলা হয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ পরবর্তী মামলা করলেও রফিক জামিনে এসে ফের অপকর্ম শুরু করেন। এমনকি জঙ্গল পাইরাং এলাকায় রফিক বাহিনীর সাথে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে বহুবার।
বন বিভাগের তথ্যমতে, ২০১০ সাল থেকে সক্রিয় ভাবে পাহাড় কেটে গৃহ নির্মাণ করে বিক্রি করে দিয়েছে রফিক বাহিনী। রফিকের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটা, পাহাড় বিক্রি, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ বিক্রি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে এক ডজন মামলা রয়েছে। এরমধ্যে ২০১০ সালে পিওআর ১১/চেচুরিয়া, ২০১১ সালে পিওআর ০৮/ চেচুরিয়া, ২০১৪ সালে পিওআর ০৩/ চেচুরিয়া উল্লেখযোগ্য। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে একই এলাকার শহীদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি পাহাড় বিক্রি ও গাছ কাটার সাথে সক্রিয় ছিলেন। পাহাড় বিক্রি নিয়ে রফিক বাহিনীর সাথে শহীদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। দু’জনের মধ্যে বিরোধের জের ধরে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এরপর থেকে শহীদ এলাকা ছাড়া। গোলাগুলির ঘটনায় রফিকের বিরুদ্ধে শহীদ বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় মামলা করেন। রফিক সবসময় দুর্গম এলাকায় অবস্থান নেন। তাই তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরতে পারে না। অপরদিকে রফিক জেলে গেলে তার লোকজন এই অপরাধ কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রফিক বাহিনীর প্রধান রফিক আহমদ বলেন, আপনি রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ডাকুন। আমি উনার সামনে প্রমাণ দেব যে, আমি পাহাড় বিক্রির সাথে জড়িত নই।
এসব অপরাধের সাথে জড়িত না থাকলে আপনার বিরুদ্ধে এতো মামলা হলো কীভাবে? এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি রফিক।