চট্টগ্রাম

আসামি ধরতে গিয়ে হাত ভাঙল কর্ণফুলী থানার ওসির

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলার আসামিকে ধরতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলায় কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেনের হাত ভেঙেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন।

জানা যায়, হামলার ঘটনায় আনোয়ারার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে হামলায় বেশ আহত এসআই মো. মিজানুর রহমান, এএসআই কামাল উদ্দিন, এএসআই আবুল বাশার গাজী, কনস্টেবল অর্ক বিশ্বাস ও কনস্টেবল নিপন দেব।

শনিবার (৮ জুন) রাত ১১টার দিকে উপজেলার চাতরি-চৌমুহনী এলাকার ভোজন বাড়ি রেস্টুরেন্টের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের আনোয়ারা সেন্টার এলাকায় বাজেটকে স্বাগত জানানোর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থল আনোয়ারা উপজেলা হলেও প্রশাসনিকভাবে সেটি নগর পুলিশের বন্দর জোনের কর্ণফুলী থানার আওতাধীন। তাই ওই ঘটনায় ২৬ জনকে আসামি করে কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। সবশেষ ওই মামলার আসামিদের ধরতে কর্ণফুলী ও আনোয়ারা থানা পুলিশ যৌথভাবে শনিবার রাতে অভিযান শুরু করে।

নগর পুলিশের বন্দর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা বলেন, মামলার এক নম্বর আসামি মোজাম্মেলকে ধরতে রাত ১১টার দিকে আনোয়ারায় টানেলের প্রবেশমুখে ভোজনবাড়ি নামে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে যায় পুলিশ। সেখানেই নেতাকর্মীরা মিলে আসামি মোজাম্মেলকে ছিনিয়ে নেন।

এ সময় নেতাকর্মীরা পুলিশ সদস্যদের ঘিরে ধরে ধাক্কা দেয়, গাছ দিয়ে আঘাত করে এবং একপর্যায়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। ইটের আঘাতে কর্ণফুলী ওসি হাতে ও শরীরের কয়েকটি স্থানে গুরুতর জখম হয়েছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫-৬ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।

কর্ণফুলী থানার ওসি মো. জহির হোসেন বলেন, ‘আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলা শুরু হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান হঠাৎ উপস্থিত হওয়ার পর ওনার লোকজন মারমুখী হয়ে ওঠে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখেছি, উনি ভোজনবাড়ি রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে বের হয়ে আসেন। এসেই তিনি আসামিকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেন।’

ওসি আরো বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা সেখান থেকে চলে আসি। পরে জানতে পারি, আবারো হামলা হয়েছে। চৌমুহনী বাজার থেকে এসআরএফের (স্পেশাল রিজার্ভ ফোর্স) একটি গাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে সেটিতে হামলা করে ভাঙচুর করে। সেখানে আরও ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।’

এদিকে, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে ওসিসহ পুলিশ আহতের ঘটনায় আরেকটি মামলা হতে পারে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। যদিও সংঘর্ষ এড়াতে এসব এলাকায় এখনও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *