উত্তরায় ২০০ ভরি স্বর্ণ লুট, তিন পুলিশসহ ৬ গ্রেপ্তার
রাজধানীর উত্তরায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ব্যবসায়ীর ২০০ ভরি স্বর্ণ লুটের ঘটনায় পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ (এএসআই) ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওই এসআইসহ পুলিশের আরও এক উপপরিদর্শক ও এক সহকারী উপপরিদর্শকের নেতৃত্বে সোনা লুটের ঘটনাটি ঘটেছে।
স্বর্ণ লুটের এ ঘটনায় গ্রেপ্তাররা হলেন- এএসআই গিয়াস উদ্দিন, জাহাঙ্গীর হোসেন (লিটন), গোলাম সারোয়ার (৪৯), আনিস মোল্লা (৩০), সুজন চন্দ্র দাস (২৯) ও আমির। এদের মধ্যে গিয়াস উদ্দিন ও আমির ছাড়া বাকি চারজন এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গিয়াস উদ্দিনের আইনজীবী এস এম ইমরুল কায়েস বলেছেন, তার মক্কেল নিরপরাধ। গিয়াস উদ্দিন স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত নন।
গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেছেন, এএসআই গিয়াস উদ্দিন গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গিয়াস উদ্দিন ফৌজদারি অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী গৌরাঙ্গ দত্ত জানান, টঙ্গী বাজারের সোনালী মার্কেটে তার শিল্পী জুয়েলার্স নামে একটি দোকান রয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর দোকানের ২০০ ভরি স্বর্ণ তিনি পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে নিয়ে গলিয়ে আনেন। শরীর ভালো না থাকায় স্বর্ণগুলো তিনি উত্তরা এলাকার বাসায় নিয়ে যান। পরদিন ভোরে ওই স্বর্ণ নিয়ে তার ভায়রার ছেলে অনিক ঘোষের দোকানের উদ্দেশে রওনা হন। উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের গাউছুল আজম অ্যাভিনিউর ৫০ নম্বর বাড়ির সামনে পৌঁছলে একটি মাইক্রোবাস তার সামনে দাঁড়ায়। মাইক্রো থেকে চারজন নেমে ডিবি পরিচয়ে তাকে হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তুলে নেয়। পরে তার কাছ থেকে ২০০ ভরি স্বর্ণ মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মেট্রোরেলের উত্তরা স্টেশনের কাছে ফেলে রেখে যায়।
পুলিশ জানায়, ঘটনা তদন্তে নেমেতারা তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িত একজনের মোবাইল ফোনের অবস্থান গাজীপুরের শ্রীপুর থানা এলাকায় শনাক্ত করে। ২৪ ডিসেম্বর গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় সহকারী উপপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের বিমানবন্দর সড়কে আটকে মালামাল লুটে নেয়ার ঘটনায়ও এই চক্র জড়িত বলে তারা সন্দেহ করছেন। চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে জোরালো চেষ্টা চলছে। দ্রুতই তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে।