ঋণখেলাপির মামলায় শিশু-শাশুড়িকে নিয়ে হাজতবাস নারীর
বরিশাল: বরিশালে ১৭ হাজার টাকা ঋণখেলাপির জন্য ক্ষুদ্র ঋণদাতা এনজিওর মামলার আসামি হয়ে শিশু সন্তান ও শাশুড়িসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন এক গৃহবধূ। রাতভর থানা হাজতে বন্দি থাকা ওই নারীকে মানবিক বিবেচনায় জামিন দিয়েছেন আদালত।
ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায়। আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় দুই বছর বয়সী শিশু ও শাশুড়িসহ ওই নারীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ। ওই নারীর নাম নুপুর মধু (২৬)। তিনি আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের তালতারমাঠ গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শ্যামল হালদারের স্ত্রী।
তার শাশুড়ি শ্রীমতি হালদার বলেন, এক বছর আগে ক্ষুদ্র ঋণদানকারী এনজিও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেওয়া হয়। পাঁচ মাস আগে ছেলে শ্যামল সৌদি আরবে গিয়েছে। সেখানে গিয়ে দুই মাস বেকার ছিল। তাই ঋণের ১৭ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। এই কারণে বিডিএস থেকে পুত্রবধূ নুপুরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
শ্রীমতি হালদার অভিযোগ করেন, মামলার নোটিশ পেয়ে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে এনজিওতে দিয়েছেন। এ সময় এনজিও থেকে জানানো হয়, তিন হাজার টাকা কিস্তি হিসেবে জমা দেবে। বাকি দুই হাজার টাকা দিয়ে মামলা উঠিয়ে (প্রত্যাহার) নিতে খরচ করবে। কিন্তু শুক্রবার রাত ১টার দিকে পুলিশ এসে নুপুরকে গ্রেপ্তার করেছে। নুপুরের সঙ্গে দুই বছর বয়সী শিশু নাতি ও আমাকেও পুলিশ নিয়ে যায়। পুত্রবধূকে গ্রেপ্তারের সময় নারী পুলিশ না থাকায় আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাত ১টার পর থেকে আমরা থানা হাজতে ছিলাম। শনিবার সকালে আমাকে ছেড়ে দিয়ে নাতি ও পুত্রবধূকে বরিশাল আদালতে নিয়ে গেছে পুলিশ।
আগৈলঝাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলাম জানান, আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় নুপুরকে গ্রেপ্তার করেছেন তারা। সঙ্গে নারী পুলিশ সদস্য না থাকায় শাশুড়ি শ্রীমতি হালদারকে সঙ্গে নিয়ে আসা হয়। শনিবার সকালে শ্রীমতি হালদারকে ছেড়ে দিয়ে নুপুরকে সন্তানসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এনজিও বিডিএসের মাঠকর্মী মো. সুমন হোসেন বলেন, ঋণ নিয়েছে এক বছর পার হয়েছে। তাই ঋণখেলাপির দায়ে মামলা করা হয়েছে। তবে নোটিশ জারির পর নুপুরের পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেননি সুমন।