এখনো শকুনীর থাবায় ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে সোনার বাংলাদেশ
চট্টগ্রাম: মহান মুক্তিযুদ্ধ মূলতই জনযুদ্ধ। বাংলাদেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ এই যুদ্ধ করেছিল বলেই মাত্র নয় মাসে বিজয় অর্জিত হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন, যুদ্ধ করেছেন। সেই চেতনাকে ধারণ করে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে একটি ট্রাককে ভ্রাম্যমাণ মঞ্চে রূপান্তর করে ‘পথে পথে বিজয়গাথা’ শিরোনামে গান-কবিতা-কথামালাসহ নানা আয়োজনে বিজয়ের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রাম।
ধর্মনিরপেক্ষতার একটি দেশের জন্য ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। যেখানে গণমানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে একটি লাল-সবুজের স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। তবে এখনো দিকে দিকে হায়েনার ডাক শোনা যায়। তাই স্বাধীন বাংলা এখনো হায়েনার কবল থেকে মুক্ত হয়নি। ততদিন মানুষের মুক্তির সংগ্রাম শেষ হবে না, যতদিন সকল শ্রেণী বৈষম্যহীন মানুষের শোষণ নিপীড়ন বঞ্চনায় মানুষের অধিকার নিগৃহীত হবে।
বোধনের প্রশংসনীয় এ উদ্যোগ সকাল এগারোটায় শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধে সংগীতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠ সৈনিক জয়ন্তী লালা’র কণ্ঠে দেশাত্মবোধক গানে। এসময় কথায় অতিথি ছিলেন নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী, নাট্যজন সুচরিত চৌধুরী টিংকু, লায়ন বাসুদেব সিনহা, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সদস্য আবৃত্তিশিল্পী সেলিম রেজা সাগর।
পথে পথে বিজয়-গাথা’র দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় বিকেল তিনটায় নগরীর বড়পোল মোড় সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল চত্বরে। শুরুতে দলীয় সংগীত পরিবেশন করে ধ্রুপদ সঙ্গীত নিকেতনের শিল্পীরা। এরপর স্বরচিত কবিতাপাঠে অংশ নেন আমন্ত্রিত কবি ও সংগীতশিল্পী কেশব জিপসী, কবি উৎপল কান্তি বড়ুয়া, কবি জসীম মেহবুব, কবি সুপ্রতীম বড়ুয়া এবং কবি ও কথায় বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সদস্য আবৃত্তিশিল্পী মাহবুবুর রহমান মাহফুজ। দেশের গানে ও কবিতায় নগরীর রাজপথ গণমানুষের ভীড়ে মুখর হতেই সেই রেশ থেকে যায় বিকাল পাঁচটায় নগরীর কাজীর দেউড়ী মোড় পর্যন্ত।
এসময় অতিথি ছিলেন মঞ্চমুকুটের দলপ্রধান নাট্যজন সুচরিত দাশ খোকন। এরপর উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের শিল্পীদের একের পর গণসংগীতের পরিবেশনায় মুক্তির গানে জয় বাংলার সমৃদ্ধি পথ মসৃণ হয়ে ওঠে। বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের দিনব্যাপী জমজমাট এ আয়োজনের সমাপনী অনুষ্ঠান ছিল নগরীর চেরাগীপাহাড় মোড়ে। এতে বোধনের আবৃত্তিশিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় প্রযোজনা ‘মিছিলের রাজপথ’ পরিবেশিত হয়।