ওসির পোস্টে একমাত্র ছেলেকে ফিরে পেল মা-বাবা
মেহমানকে এগিয়ে দিতে যাওয়া বাবা-মার পিছু নেয় আড়াই বছরের রাফি। ঘর থেকে বেরোনোর পর বাসায় পথ ভুলে হারিয়ে যায় সে। হারানো ছেলেকে হন্ন হয়ে খুঁজছিলো তার পরিবার। এরইমধ্যে রাফিকে কান্না করতে দেখে এক মহিলা তাকে নিয়ে হাজির হন থানায়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার অভিভাবকের সন্ধানে দেন ফেসবুক পোস্ট, সেই পোস্ট দেখে ছেলে রাফিকে খুঁজে পায় অভিভাবক।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকেল ৪টার দিকে রাফিকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেন বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা।
রাফি রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার জুয়েল রানা-আফিয়া বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে। তারা নগরের বায়েজিদ থানার শান্তিনগর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। জুয়েল রানা পেশায় শ্রমিক।
ওসি জানান, সকাল ১০টার দিকে শান্তিনগর এলাকা থেকে আড়াই বছরের শিশু রাফি হারিয়ে যায়। এরপর এক মহিলা আনন্দবাজার এলাকায় রাফিকে কাঁদতে দেখে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি নিখোঁজের পোস্ট দেন। সেই পোস্ট দেখে এক ব্যক্তি রাফির মা-বাবাকে খবর দেন। এরপর তারা থানায় ছুটে আসলে রাফিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
রাফির বাবা জুয়েল রানা বলেন, ‘আজ সকালে ঘরে আসা মেহমানদের এগিয়ে দিতে আমি এবং আমার স্ত্রী ঘর থেকে বের হই। রাফিও তখন আমাদের পিছু পিছু বের হয়। কিন্তু তখন আমরা কেউই খেয়াল করিনি। এরপর থেকে তাকে আমরা খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এরপর আমার বন্ধু হাসান ওসি স্যারের ফেসবুক পোস্ট দেখে আমাকে জানায় রাফি থানায় আছে। এরপর আমি রাফিকে নিতে থানায় ছুটে আসি।’
জুয়েল আরও বলেন, ‘ওসি স্যার যদি ফেসবুকে পোস্ট না দিতেন তাহলে মনে হয় আমার ছেলেকে খুঁজে পেতে আমার অনেক কষ্ট হতো।’
ওসি সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, ‘প্রায়ই আমাদের থানায় হারিয়ে যাওয়া শিশুদের খবর আসে। তখন আমি থানার নামে খোলা একটি ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিই। সেসব পোস্ট মানুষ প্রচুর শেয়ার করে। ফলে, নিখোঁজ হওয়া এসব শিশুদের তাদের বাবা-মা সহজেই খুঁজে পান।’
তিনি বলেন, ‘রাফির ক্ষেত্রেও আমি একইভাবে পোস্ট দিই। দুই ঘণ্টার মধ্যেই তার পরিবার আমাদের সাথে যোগাযোগ করে। কিছুদিন আগে মা-বাবার সাথে রাগ করে ঘরছাড়া আশরাফুল ইসলাম নামে ১৪ বছর বয়সী এক শিশুকেও ফেসবুক পোস্ট দেখে তার মা-বাবা নিতে আসেন। যদিও এটি পেশাগত কাজেরই অংশ, কিন্তু যখন পরিবার তার হারানো বুকের ধনকে ফিরে পায়, আমারও আনন্দ লাগে।’