কর্ণফুলী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে কালুরঘাট সেতু
চট্টগ্রাম: ‘বালুর টাল’ নামে পরিচিত চান্দগাঁও থানাধীন কালুরঘাট এলাকা। কর্ণফুলী নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বাল্কহেড ভর্তি করে এনে রাখা হয় কালুরঘাট সেতু সংলগ্ন এলাকা ও সড়কের পাশে।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকিতে পড়ছে শতবর্ষী সেতুটি। জানা গেছে, প্রতিদিন কালুরঘাট সেতু এলাকা থেকে ২০-২৫টি ড্রেজার দিয়ে বাল্কহেডে বালু উত্তোলন করা হয়।
একেকটি ড্রেজার দিয়ে দিনে ৩০-৫০ হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করা যায়। কর্ণফুলী নদীর আশপাশের এলাকায়ও রয়েছে বালু সিন্ডিকেটের দাপট। তারা ইজারাপ্রাপ্তদের বালু উত্তোলনে বাধা প্রদান ও চাঁদাবাজি করছে। সেতুর উভয় পাশে গড়ে উঠেছে বালু বিক্রয়কেন্দ্র। নদীর তীর দখল করে প্রভাবশালীরা বালু বাণিজ্য করে আসছে।
কালুরঘাট সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে গত বছরের ১ আগস্ট থেকে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে ১৯৮৬-৮৭ এবং ২০০৪-০৫ সালে দুই দফায় সেতুর ব্যাপক সংস্কারকাজ করা হয়েছিল। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল বিভাগ ৪ নভেম্বর তিন দফায় ট্রায়াল রান সম্পন্ন করার পর ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ডিসেম্বর থেকে সরাসরি ট্রেন চলাচল করছে।
রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, কর্ণফুলী নদীর ওপর ৬৩৮ মিটার দীর্ঘ কালুরঘাট সেতু সংস্কারের পর প্রতিদিন ২২-২৪টি কোচের দুই জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। ভবিষ্যতে ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়বে। সেতুর ওপরের অংশের কাজ আপাতত শেষ হলেও ১৯টি স্প্যান থেকে মাটি সরে যাওয়ায় নদীর তলদেশে ৬০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হবে। কিন্তু এভাবে অবাধে বালু উত্তোলন করা হলে স্প্যানের মাটি সরে যাবে।
কালুরঘাট সেতুতে শুরু থেকেই ট্রেন চলতো। তবে জীর্ণ হয়ে পড়ায় ট্রেনের গতিবেগ ছিল সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার। আগেও এই এলাকায় বালু উত্তোলন করা হয়েছে অবাধে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড সংস্কারকাজ করার পর ট্রেনের গতি বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় গুণ।
কালুরঘাট খেজুরতলা বালু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. শামসুল আলম বলেন, ‘আমাদের সমিতির সদস্য ৬০-৭০টি প্রতিষ্ঠান। কালুরঘাট সেতুর চারপাশ থেকে কারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে সে বিষয়ে জানা নেই’।