কাঁধে করে ডাকাতকে তুলে নিয়ে এলো পুলিশ
জমিতে সেচের পাম্পে কাজ করে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত ডাকাত আসামি। খবর পেয়ে ছুটে যায় পুলিশ। জমিতে ওই আসামিসহ কয়েকজন মিলে খাচ্ছিলেন ইয়াবা। পানি পানের ছুতোয় ছদ্মবেশে যায় পুলিশ।
আসামিকে ধরার পরই অন্যরা পালায়। এক পুলিশকে কামড়ায় আসামি। কোনোভাবেই সে আসতে চাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে কাঁধে করে তাকে তুলে আনা হয়। এ সাহসিকতার গল্প ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানা পুলিশের।
গ্রেফতার করে ডাকাতকে পুলিশ সদস্যের কাঁধে তুলে আনার ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার (২২শে মার্চ) ইফতারের আগ মুহূর্তে উপজেলার হরিপুরের একটি জমি থেকে জীবন নামের এই ডাকাতকে এভাবেই ধরে আনে পুলিশ।
গ্রেফতার জীবন ওই এলাকার হুসন আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা আছে। সম্প্রতি তিনি মাধবপুর-হরিপুর সড়কে ডাকাতি শুরু করেন।
পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জীবনের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে নাসিরনগর থানা পুলিশ। ডাকাত জীবনকে গ্রেফতারের দায়িত্বে থাকা নাসিরনগর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রূপন নাথ এএসআই কামরুল ইসলাম ও তিন পুলিশ কনস্টেবলকে নিয়ে হরিপুরে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন জীবন তার সঙ্গীদের দিয়ে একটি জমিতে বসে ইয়াবা সেবন করছেন।
তখন পুলিশ সদস্যরা সেখানে সাদা পোশাকে অবস্থান নেন। এ সময় পুলিশ সদস্যদের পক্ষে গিয়ে জীবন ও তার সঙ্গীদের কাছে পানি চাওয়া হয়। এক পর্যায়ে অবস্থা বুঝে জীবনকে গ্রেফতার করেন পুলিশ সদস্যরা। পরানো হয় হাতকড়া।
কিন্তু পুলিশ কনস্টেবল রানার হাতে কামড় দিয়ে ও ধস্তাধস্তি করে হাতকড়া নিয়েই দৌঁড়ে পালান জীবন। পুলিশ সদস্যরা ছুটে গিয়ে আবার তাকে আটক করেন। এরপরও তাকে বাগে আনা যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে এএসআই মো. কামরুল ইসলাম তাকে কাঁধে তুলে নেন। কিছুদূর আনার পর তাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কড়া পুলিশ পাহারায় থানায় নিয়ে আসা হয়।
এসআই রূপন নাথ জানান, পাঁচজন মিলে এ অভিযান চালান। জীবন খুবই ধূর্ত। তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তাকে বাধ্য হয়ে কাঁধে তুলে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায় রানা নামে এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহাগ রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, জীবন ডাকাত খুবই ধূর্ত প্রকৃতির। তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। গোপন সংবাদে এ অভিযান চালানো হয়। শনিবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।