কাপ্তাই লেকে কোটি টাকার বাঁশ নষ্ট
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কাপ্তাই পিডিবির আওতাধীন কার্গো ট্রলির মাধ্যমে লেকের বাঁশ পার্শ্বস্থ কর্ণফুলী নদীতে পারাপারে বিঘ্নিত হওয়ায় কোটি টাকার বাঁশ শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতিসহ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কাপ্তাই লেক থেকে কর্ণফুলী নদীতে বাঁশসহ বিভিন্ন মালামাল পারাপারের একমাত্র প্রধান বাহন হচ্ছে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আওতাধীন কার্গো ট্রলি। ১৯৮৬ সালে এটি নির্মিত হয়। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৩৮ বছরেও কার্গো ট্রলিটি আর সংস্কার করা হয়নি।
সূত্র জানায়, পার্বত্যাঞ্চলের বাঁশসহ বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল কাপ্তাই লেক পথে কার্গো প্রণালীতে এসে জড়ো হয়। এরপর কার্গো ট্রলির মাধ্যমে তা কর্ণফুলী নদীতে পারাপার করা হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এভাবে কাঁচা মালামাল পারাপার হচ্ছে। বাঁশসহ এসব কাঁচামাল রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টেকনাফ, মিরসরাই, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
এদিকে, বনবিভাগ ও কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষসহ সরকারি নির্ধারীত রাজস্ব দিয়েই বাঁশসহ বিভিন্ন কাঁচামাল পরিবহন করছে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে কার্গো ট্রলির যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত সমস্যার চুড়ান্ত সমাধান না করে কোনমতে কাঁচামাল পারাপার করছে কর্তৃপক্ষ। ফলে মালামাল পারাপারে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি রয়েই গেছে। কার্গো ট্রলি ভালো থাকা অবস্থায় প্রতি ঘন্টায় ১০-১২ ট্রলি বোঝাই বিভিন্ন কাঁচামাল পারাপার করা হতো। বর্তমানে ঘন্টায় ৩-৪ ট্রলি বোঝাই কাঁচামাল পার করতে বহু কষ্ট এবং মারাত্মক ঝুঁকি নিতে হচ্ছে চালকদের। কার্গো ট্রলি দিয়ে পারাপার কমে যাওয়ায় বাঁশ ব্যবসায়ীরা ঠিকমত মালামাল সরবরাহ করতে না পারায় নদী ও লেকে কোটি টাকার বাঁশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে আর্থিক ভাবে তারা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানায়।
বাঁশ ব্যবসায়ী আলহাজ্ব আব্দুল গফফার, মোঃ রাসেল প্রকাশ রাশু ও খোরশেদ আলম জানায়, দীর্ঘ ৬ মাস ধরে বাঁশ এবং অন্যান্য মালামাল নির্দিষ্ট পরিমাণে পারাপার করতে পারছিনা। কার্গোতে যান্ত্রিক সমস্যার ফলে মালামাল আগের মত পারাপার করা যাচ্ছে না। কার্গো ট্রলি চলছে শ্লথ গতিতে। বাঁশ ও বিভিন্ন মালামাল সময়মত সরবরাহ করতে না পারায় নদী ও লেকে কোটি টাকার বাঁশ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের এখন পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আমরা বাঁশ পরিবহণ করতে বনবিভাগকে ১৫ ভাগ এবং কার্গো ট্রলিকে টন প্রতি ২৫ টাকা রাজস্ব দিয়ে আসছি। আমরা চাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্গো ট্রলি কর্তৃপক্ষ দ্রুত যান্ত্রিক সমস্যা সমাধান করুক। এতে করে সরকার ও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করতে পারবে।
যোগাযোগ করা হলে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের কার্গোতে যান্ত্রিক সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, মেসার্স এন্টারপ্রাইজ ও জেবি নামে দুটি প্রতিষ্ঠান কার্গো ট্রলি সংস্কার করার কাজ পেয়েছে। মেরামতের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমরা বুঝে নিয়েছি। অতিদ্রুত সংস্কার কাজ করা শুরু করা হবে।