কেন বারবার মনোনয়ন পান না আ জ ম নাছির
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের দুটি ধারার একটি নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। একসময় দলের পদ-পদবিবঞ্চিত আ জ ম নাছির দুই বছরের ব্যবধানে পেয়েছিলেন সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র পদ। ২০১৩ সালে পান দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ। দলের সমর্থন পেয়ে ২০১৫ সালে হয়েছিলেন নগরের মেয়র। তবে সে ‘সুসময়’ এখন আর নেই এই নেতার।
মেয়রের পর এবার সংসদ সদস্য পদেও দলের মনোনয়ন পাননি আ জ ম নাছির উদ্দীন। যদিও নগরের তিনটি আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। তিনটি আসনেই নগর রাজনীতিতে তাঁর বিপরীত ধারায় থাকা বর্তমান তিন সংসদ সদস্যকে আবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রাম-৮ ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনেও প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ওই সময়েও তাঁর আগ্রহকে গুরুত্ব পায়নি কেন্দ্রের কাছে।
চট্টগ্রামের রাজনীতিতে ‘প্রভাবশালী’ এই নেতার বারবার দলের সমর্থন বঞ্চিত হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা রয়েছে। বিশেষ করে কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক না থাকাকে বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ কিছু কারণে কেন্দ্র তাঁর ওপর নাখোশ বলে জানা গেছে।
মেয়র পদে দলীয় সমর্থন হারানোর পর ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় আ জ ম নাছির উদ্দীন অভিযোগ করেছিলেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতি করার পরও জাতির জনকের খুনিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, অপপ্রচার, অপরাজনীতি করা হয়েছে বলে ওই সভায় মন্তব্য করেন তিনি।
বারবার মনোনয়নবঞ্চিত থাকার জন্য ২০১৫ সালের এপ্রিলে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন ইস্যুতে দলের বয়োজ্যেষ্ঠ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হয় নাছিরের। এই দূরত্ব দূর করতে তাঁর আন্তরিকতার ঘাটতি ছিল বলে মনে করেন অনুসারী। যেমন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে নগরের একটি উদ্যানের উন্নয়ন নিয়ে বিভক্তি তৈরি হয়, যা পরে তিক্ততায় রূপ নেয়। মোশাররফ হোসেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য।
কী কারণে মনোনয়ন পাননি জানতে চাইল আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কী কারণে আমার মনোনয়নের বিষয়টি বিবেচিত হয়নি, তা জানি না। তবে নিশ্চয়ই এটার কোনো না কোনো কারণ আছে। এটা দলীয় প্রধান বা মনোনয়ন বোর্ড বলতে পারবেন। তবে এ নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ, কষ্ট, অভিমান ও হতাশা নেই। আমি সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি। দলের অর্পিত দায়িত্বও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছি।’