চট্টগ্রাম

কেবিন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে চার বিরতিহীন ট্রেনে

ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের চার বিরতিহীন ট্রেনে প্রথমবারের মতো কেবিন সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আগামী ২৮ মে থেকে ট্রেনযাত্রীরা এ সুবিধা পাবেন। কেবিন সুবিধা যুক্ত হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ট্রেনযাত্রা আরও নিরাপদ, আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে বলে আশা করছেন রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রেলওয়েসূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের বিরতিহীন ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস এবং সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে ৩টি করে এসি কেবিন এবং ১টি করে নন এসি কেবিন যুক্ত করার নির্দেশনা জারি করেছে রেলওয়ে মহাপরিচালক কার্যালয়ের ট্রাফিক ট্রান্সপোর্টেশন শাখা। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা নতুন রেক দিয়েই এই দুই ট্রেনে কেবিন সুবিধা চালু করা হবে।

রেলওয়ে মহাপরিচালক কার্যালয়ের ট্রাফিক ট্রান্সপোর্টেশন শাখার একই আদেশে যাত্রী চাহিদার শীর্ষে থাকা ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেসেও প্রথমবারের মতো কেবিন যুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুটি ট্রেনেই ৩টি করে কোরিয়ান এসি কেবিন যুক্ত হচ্ছে। এতে ট্রেনে চড়ে পর্যটননগরী কক্সবাজার যাওয়া যাবে শুয়ে শুয়েই।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সুবর্ণ ও সোনার বাংলা ১৮টি রেক নিয়ে চলবে। এর মধ্যে ৬টি শোভন চেয়ার, ৫টি এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা), ৪টি কেবিন, ২টি গার্ডব্রেক ও খাবার গাড়ি এবং ১টি পাওয়ার কার রয়েছে। কেবিনের ১৩২টিসহ দুটি ট্রেনেরই মোট আসন সংখ্যা রাখা হয়েছে ৭৯৭টি। আগের মতোই সুবর্ণ সকাল সাড়ে ৭টা এবং সোনার বাংলা বিকেল পৌনে ৫টায় চট্টগ্রাম ছাড়বে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ১৯৯৮ সাল থেকে চলছে দেশের প্রথম বিরতিহীন ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস। দুই যুগেরও বেশি সময় পর এই ট্রেনে এখন কেবিন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে। আরেক বিরতিহীন ট্রেন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলছে ২০১৬ সাল থেকে। এই ট্রেনেও প্রথমবারের মতো কেবিন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে প্রায় আট বছর পর। দুটি ট্রেনই এখন কোরিয়ান রেকে চলবে।
অন্যদিকে, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেস চলবে ১৬টি রেক নিয়ে। এর মধ্যে ৭টি শোভন চেয়ার, ৩টি এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা), ৩টি কেবিন, ২টি গার্ডব্রেক ও খাবার গাড়ি এবং ১টি পাওয়ার কার রয়েছে। কেবিনের ৯৯টিসহ দুটি ট্রেনেরই মোট আসন সংখ্যা রাখা হয়েছে ৭১৪টি। আগের মতোই কক্সবাজার এক্সপ্রেস রাত সাড়ে ১০টা এবং পর্যটক এক্সপ্রেস সকাল সোয়া ৬টায় কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে যেসব আন্তঃনগর ট্রেন চলে, এর মধ্যে সুবর্ণ এবং সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের চাহিদা বেশি। কারণ বিরতিহীন হওয়ায় এই দুই ট্রেনে দ্রুতই গন্তব্যে পৌঁছা যায়। তবে কেবিন সুবিধা না থাকায় যারা পরিবার-পরিজন নিয়ে ভ্রমণ করেন তারা অসুবিধায় ছিলেন। এখন এক কেবিনে পরিবারের সদস্যদের নিয়েই ভ্রমণের সুবিধা পাবেন যাত্রীরা।
অন্যদিকে, ঢাকা-কক্সবাজারের দূরত্ব বেশি হওয়ায় গত ডিসেম্বরে এই রেলপথ চালুর পর থেকেই ট্রেনে কেবিন সুবিধা যুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন যাত্রীরা। এখন কক্সবাজার ও পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনে কেবিন সুবিধা যুক্ত হওয়ায় যাত্রীদের সেই দাবি মিটবে। ট্রেনে চড়ে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজার ভ্রমণ আরও আরামদায়ক হবে।

জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে পূর্বকোণকে বলেন, সুবর্ণ, সোনার বাংলা, কক্সবাজার ও পর্যটক এক্সপ্রেসে কেবিন সুবিধা যুক্ত করে কোরিয়ান রেক পুনর্বিন্যাস এবং মহানগর গোধূলী ও তূর্ণা এক্সপ্রেসে কোরিয়ান রেক পরিবর্তন করতে নির্দেশনা পেয়েছি। রেলওয়ে মহাপরিচালক কার্যালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা সবধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *