চট্টগ্রাম

কোটা আন্দোলনের বলি নিরীহ ফারুকের স্ত্রীর প্রশ্ন, আর কত প্রাণ যাবে?

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে নিহত ফারুক (৩২) একজন নিরীহ দোকান কর্মচারী ছিলেন। কর্মস্থলে ফেরার পথে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

ফারুকের বাড়ি নোয়াখালীতে। তার সংসারে রয়েছে ১২ বছরের একটি ছেলে ও ৭ বছরের একটি মেয়ে। ফারুক শুলকবহরে এসএস ফার্নিচার দোকানে কাজ করতেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন দেখতে এসে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় মধ্যে বুকে গুলি লেগে প্রাণ হারান।

স্ত্রী সীমা আক্তার স্বামীর মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ। তিনি বলেন, আমার স্বামী তো নেই। আমার সন্তানদের কে খাওয়াবে? তাদের দায়িত্ব কে নিবে? সরকারকে বলেন এসব থামাতে। আর কত নিরীহ মানুষের প্রাণ যাবে। পথচারীরা কি বাসা থেকেও বের হতে পারবে না?

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফারুকের শ্বশুর মো. শহীদ বলেন, আন্দোলন করে আর লাভ কী? আমার ফারুককে ফিরিয়ে দিতে পারবেন? আপনারা তো আমার জামাইকে আর ফিরিয়ে দিতে পারবেন না। তাহলে এখন আর আন্দোলন করে কি হবে!

বেলা তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়। এ সময় কয়েকজন অস্ত্রধারীকে গুলি করতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে হাতবোমার বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রামে নিহত তিনজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন মো. ফারুক (৩২) ও মো. ওয়াসিম (২২)। ফারুক একটি আসবাবের দোকানের কর্মচারী এবং ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ও কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে জানা গেছে। অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া আহত অন্তত ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক নুজহাত ইমু বলেন, নিহত দুজনের মধ্যে ফারুকের বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। ওয়াসিমের মৃত্যুর কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহত অপরজনের পিঠেও গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *