চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে কমছে বন্যার পানি, বাড়ছে পানিবাহিত রোগের শঙ্কা

বন্যাকবলিত এলাকা মীরসরাই, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাউজানের বিভিন্ন এলাকা থেকে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। পানি নামে যাওয়ার পর নতুন করে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট।

এতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগের। যদিও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানিবাহিত রোগবালাই মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হালদা নদীর বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ে ফটিকছড়িতে। এতে উপজেলাটির ভুজপুর, নাজিরহাট পৌর সদর, বাগানবাজার, দাঁতমারা, নারায়নহাট, পাইন্দং, ভুজপুর, সুন্দরপুর, সুয়াবিল, হারুয়ালছড়ি, সমিতির হাট ও ভক্তপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) পর্যন্ত এসব এলাকার বেশিভাগ স্থান থেকেই পানি নেমে গেছে। স্মরণকালের এ ভয়াবহ বন্যায় ফটিকছড়িতে শতকরা ৩৫ ভাগ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। এতে প্রায় সাড়ে ৮ হাজারের বেশি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অন্যদিকে, মীরসরাইয়ে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও বেশিরভাগ এলাকা ডুবে আছে হাটু ও কোমর পানিতে। সাগর তীরের এ উপজেলাটির ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত। এর মধ্যে করের হাট, হিংগুলী, জোরারগঞ্জ, ধুম, ওসমানপুর এসব ইউনিয়নের অনেক জায়াগায় বন্যার পানি বেশি। সব মিলিয়ে ১২টি ইউনিয়নে ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় ছিল।

রাউজান উপজেলার পশ্চিম নোয়াপাড়া, মোকামীপাড়া, সাম মাহালদারপাড়া, ছামিদর কোয়াং, কচুখাইন, দক্ষিণ নোয়াপাড়া; উরকিরচর ইউনিয়নের মইশকরম, সওদাগরপাড়া, সুজারপাড়া, পূর্ব উরকিরচর, খলিফার ঘোনা, বাগোয়ান, পশ্চিম গুজরা, গহিরা, নোয়াজিশপুর, চিকদাইর, ডাবুয়াসহ কয়েকটি গ্রামের অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দী থাকলেও বর্তমানে নেমে গেছে পানি।

অন্য তিন উপজেলার মতো হাটহাজারীতেও বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখনও উপজেলার পূর্ব ফরহাদাবাদ, পূর্ব ধলই, সেকান্দর পাড়া, পূর্ব এনায়েতপুর, গুমানমর্দ্দন, কাজিরখীল, মোহাম্মদপুর, মোজাফফরপুর, ভাগিরঘোনা, মেখল উত্তর ও দক্ষিণ মাদার্শা, বুড়িশ্চরসহ বিভিন্ন গ্রামে রয়েছে হাঁটু পানি।

এদিকে বন্য পরিস্থিতির উন্নতি হলেও নতুন করে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকট। সেই সঙ্গে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগ নিয়ে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।

ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আফরিন আজিম বাংলানিউজকে বলেন, পানি নেমে গেলেও এখনও পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা তেমন বাড়েনি। তবে ফাংঙ্গাল ইনফেকশন নিয়ে কিছু রোগী পাওয়া যাচ্ছে। আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে তাদের ছেড়ে দিচ্ছি। পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা বাড়লে তা সামাল দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ওষুধপত্র মজুদ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ফটিকছড়ির মত হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে রোগীর চাপ সামাল দিতে সব ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতালের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ডা. রশ্মি চাকমা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *