চট্টগ্রাম

চন্দ্রনাথ পাহাড়ের গাছ যাচ্ছে কোথায়?

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাতীর্থ সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধাম। এ ধামের নামেই পুরো পাহাড়ের নাম। তীর্থযাত্রী তো বটেই চন্দ্রনাথ পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই পর্যটকরা আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। এ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পরিধি প্রায় ৮০৮ হেক্টর।

এ পাহাড়ি বনে আছে গর্জন, তেলসুর, ডেউয়া, গুটগুটিয়া, বাঁশপাতা, জারুল, কাঠবাদাম, অর্জুন, দেবদারু, নাগেশ্বর সহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির বৃক্ষ। তাই বিপুল পরিমাণ বৃক্ষরাজির সম্ভারে চোখ পড়েছে গাছখেকোদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চন্দ্রনাথ পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে গাছ কেটে মন্দিরের পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সীতা মন্দির পেরিয়ে স্বয়ম্ভূ নাথ মন্দিরের নিচের পাদদেশে দেখা গেল ভটভটি দাঁড়িয়ে আছে। একটিতে গাছ তোলা হচ্ছে। ৫-৬ জন শ্রমিক এ ভটভটিতে গাছ লোড করছেন। যদিও ঘণ্টাখানেক আগেও এখানে কোনো কাটা গাছ ছিল না। আসার পথে দেখা গেলে আরেকটি ভটভটি ওই পথেই যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের আনাগোনা কম থাকলে ভটভটির চলাচল বেড়ে যায়। মন্দিরের পথে ব্যবহার করে সহজে এসব গাছ নিয়ে যাওয়া হয়। কাটা গাছগুলো পাহাড় থেকে অল্প অল্প করে নামানো হয়। তারপর ভটভটিতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এ কাজে নিযুক্ত শ্রমিকরা বেশিরভাগই বাইরের এলাকার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক অটোরিকশা চালক, লম্বা-মাঝারি সাইজের এসব গাছ ভটভটির মাধ্যমে সহজে পরিবহন করা যায় তাই এসব গাছই বেশি কাটা হয়।

তবে এর সঙ্গে কারা জড়িত তা বলতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

সীতাকুণ্ড বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন বলেন, এই এলাকা আমার আওতাধীন নয়। আমার এলাকায় এ ধরনের কোনো ঘটনা জানা নেই।

সীতাকুণ্ড ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাউদ্দিন সেলিম বলেন, ইকোপার্কের আওতাধীন পাহাড়ে গাছ কাটার কোনো প্রশ্নই আসে না।

তাহলে চন্দ্রনাথ মন্দিরের পথে এসব গাছ কোথা থেকে আসছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাহাড়ি বনের এলাকাটি বিভিন্ন রেঞ্জের অন্তর্ভুক্ত তাই গাছ কোথা থেকে আসছে জানি না।

উল্লেখ্য, দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষার লক্ষ্যে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সংরক্ষিত ও প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে গাছ কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *