চাঁদাবাজি মামলায় খালাস পেলেন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি
চট্টগ্রাম: নগরের পাঁচলাইশ থানার কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবুসহ ৬ জন আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শামছুল আরেফীনের আদালত এ রায় দেন।
খালাস পাওয়া বাকি ৫ আসামি হলেন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক আবু নাছের চৌধুরী, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য এটিএম মঞ্জুরুল ইসলাম, নগরের শুলকবহর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম নাজমুল আহসান, যুবলীগকর্মী ইদ্রিস মিয়া ও ইমরান হোসেন।চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ বলেন, কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলায় শুধুমাত্র বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছিল।
মামলার বাদীর সঙ্গে আসামিরা এক ধরনের আপস হয়েছে। সাক্ষীর জন্য বার বার আদালত তারিখ দিলেও সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেনি। সাক্ষীরা আর কেউ সাক্ষ্য না দেওয়ায় আসামিদের সবাইকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আর পড়ুনঃ দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে পটিয়ায় যুবক খুন
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালে নগরের পাঁচলাইশ থানার পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায় একটি পুরনো ভবন কেনার পর সেটি ভেঙে নতুন ভবন তৈরির চেষ্টা করছিলেন একই এলাকার বাসিন্দা বন্ধন নাথ। ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ডিজাইন সোর্স টিম লিমিটেড নামে একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে ভবন তৈরির দায়িত্ব দেন তিনি। কিন্তু ৯ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরুর পর দেবাশীষ নাথ দেবুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ভবন তৈরি করতে হলে তাদের ‘এক কোটি’ টাকা দিতে হবে বলে জানান। এতে অস্বীকৃতি জানালে তারা বন্ধনকে মারধর করে। একপর্যায়ে পিঠের ডান পাশে গুলি করে গুরুতর জখম করে বলে মামলার আরজিতে দাবি করেন বন্ধন নাথ। তাদের সঙ্গে না পেরে প্রাইম ব্যাংকের পাঁচটি চেকের মাধ্যমে দেবুসহ সন্ত্রাসীদের ৭০ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন এই প্রবাসী। এতেও ক্ষান্ত হননি দেবুর নেতৃত্বে আসা সন্ত্রাসীরা। ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভবনের কাজ শুরুর পর আরও ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য বন্ধনের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন সন্ত্রাসীরা। তাদের কারণে একপর্যায়ে কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন বন্ধন। ২৩ ফেব্রুয়ারি বন্ধন নাথ পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ২৪ ফেব্রুয়ারি দেবাশীষ নাথ দেবু ও তার সহযোগী এটিএম মঞ্জুরুল ইসলাম রতনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলায় দেবাশীষ নাথ দেবুকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ২০২২ সালের ২১ আগস্ট পঞ্চম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ নারগিস আক্তারের আদালতে আসামি ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়েছিল।