ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ঢাকায় জাতিসংঘের কারিগরি দল
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের হত্যার তদন্ত প্রক্রিয়া সহায়তার জন্য বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) জাতিসংঘ কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল ঢাকায় এসেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রোরি মুনগোভেনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের এই কারিগরি দল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রোরি মুনগোভেন বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক এখানের জনগণের জন্য গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। তিনি এ ঐতিহাসিক সময়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সে জন্যই আমরা ঢাকায় এসেছি। তবে আমরা সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তের জন্য আসিনি। আমরা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি।
সূত্র জানায়, জাতিসংঘের তিন সদস্যের কারিগরি দল ২২-২৮ পর্যন্ত ঢাকা সফর করবে। তারা প্রাথমিকভাবে তথ্যানুসন্ধানের কাজ করবে।
কারিগরি বিশেষজ্ঞ দলের সফরের পর পরবর্তীতে ঢাকায় আসবে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। সেই টিমই চূড়ান্তভাবে হত্যার তদন্ত করবে। কারিগরি বিশেষজ্ঞ দলটি মূলত চূড়ান্তভাবে তদন্তের জন্য একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করবে। পরবর্তীতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন চূড়ান্তভাবে তদন্তের কাজটি করবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এর আগে জানিয়েছিলেন, আন্দোলনে নিহত ও আহতের ঘটনা তদন্তের স্বার্থে জাতিসংঘকে সহায়তা করতে প্রস্তুত অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের চাওয়া একটা নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। এ সরকারের অবস্থান খুবই পরিষ্কার ও স্বচ্ছ। যারা এ অপরাধগুলো করেছে এবং যারা হুকুম দিয়েছে তাদের অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন করতে হবে এবং এ কাজে জাতিসংঘ সহায়তা করুক, এটা নিয়ে আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে।
ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস জানিয়েছেন, জাতিসংঘের কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল এসে প্রাথমিক তদন্তের কাজ করবেন। তাদের ম্যান্ডেট কী হবে, কীভাবে তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করবেন, এ বিষয়ে আরও আলোচনা হবে। প্রতিনিধিদল প্রাথমিক তদন্তের কাজের পাশাপাশি তাদের টার্মস অব রেফারেন্স (কাজের পরিধি), কাজের সময় সীমাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করে তা চূড়ান্ত করবে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৬৩০ জনেরও বেশি ছাত্র-জনতা মারা গেছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এসব লোক নিহতের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করবে জাতিসংঘ।