জানা গেল যে কারণে মনিরুলকে গুলি করেছে কাওছার
হাওলাতের (ধার) টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে মনিরুলকে গুলি করেছে কাওছার। এমনটাই দাবি করেছেন রাজধানীতে সহকর্মীর গুলিতে নিহত পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হকের ভগ্নিপতি আনিছুর রহমান।
রোববার (৯ জুন) কনস্টেবল মনিরুল হকের (২৭) ভগ্নিপতি আনিছুর রহমান এ দাবি করেন।
রোববার (৯ জুন) সন্ধ্যায় মনিরুল হকের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বিষ্ণুপুরে গেলে মনিরুলের ভগ্নিপতি আনিছুর রহমান একথা বলেন।
মনিরুলের ভগ্নিপতি আনিছুর রহমান বলেন, কাওছার নামে যে পুলিশ সদস্য মনিরুলকে গুলি করেছে, তার কাছে হাওলাতের (ধার) টাকা পাওনা ছিলো মনিরুলের। টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এ কাজ করে কাওছার।
এ কথা বলার পরই ‘প্রমাণ ছাড়া এসব বলা ঠিক হবে না’ বলে উপস্থিত লোকজন আনিছুরকে থামিয়ে দেন। পরে আনিছুর আর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি।
এদিন মনিরুলের গ্রামের বাড়ি চলছে শোকের মাতম। মনিরুলের স্ত্রী তানিয়া আক্তার তন্বী দুই বছরের শিশুসন্তান তাকিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বলছেন, আর কিছু চাই না, আমার স্বামীরে ফিরিয়ে দাও।
আর মনিরুলের দুই বছর বয়সী ছেলে তাকি বাড়িতে একসঙ্গে এত মানুষ দেখে একজনের কোল থেকে অন্যজনের কোলে ঘুরছে।
মনিরুলের বৃদ্ধা মা দেলোয়ারা হক ছেলের শোকে কান্নায় বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। দিনভর কেঁদে চোখের জল ফুরিয়ে গেছে। আর কান্নার শক্তি নেই। এখন বিছানায় শুয়ে শুধু নীরবে চেয়ে রয়েছেন। তার মুখে কোনো ভাষা নেই।
জানা গেছে, নিহত মনিরুল বিষ্ণুপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত শামসুল হকের ছেলে। তারা তিন ভাই তিন বোন। সবার ছোট মনিরুল। ২০১৪ সালে নেত্রকোনার আঞ্জুমান সরকারি উচ্চ থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। পরে ময়মনসিংহে একটি বেসরকারি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে ৪র্থ সেমিস্টার পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরমধ্যে ২০১৬ সালের শেষের দিকে পুলিশে যোগ দেন। তিন বছর আগে জেলার পূর্বধলা উপজেলায় বিয়ে করেন মনিরুল। তার স্ত্রীর নাম তানিয়া আক্তার তন্বী। তাকি নামে তাদের দুই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর গুলশান থানাধীন বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোন এলাকার ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মীদের ডিউটিবুথের সামনে ডিউটিরত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কাউসার অপর এক পুলিশ সদস্য আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।