জিম্মি জাহাজে কোনো ধরনের অভিযানের পক্ষে নয় মালিকপক্ষ
ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’র ২৩ নাবিককে উদ্ধার করতে কোনো ধরনের সামরিক অভিযানের পক্ষে নয় মালিকপক্ষ। এ বিষয়ে জাহাজের মালিকপক্ষ এবং সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্ট মহলে বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে নাবিকদের উদ্ধারে জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে মালিকপক্ষ।
এ বিষয়ে জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম সোমবার (২৫ মার্চ) ঢাকা পোস্টকে বলেন, নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় মুক্ত করে আনা আমাদের লক্ষ্য। এজন্য আমরা জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। তবে জিম্মি জাহাজে সোমালি পুলিশ কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেভাল ফোর্সসহ যেসব সামরিক অভিযানের কথা আসছে, এগুলো আমরা জানি না। আমাদের বার্তা স্পষ্ট। আমরা কোনো ধরনের সামরিক অভিযানের পক্ষে নই। কারণ আমরা নাবিকদের ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক মাধ্যকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নাবিকদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ চলছে। তারা ভালো আছেন। তাদের পরিবারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। সবমিলিয়ে আমরা নাবিকদের সুস্থভাবে উদ্ধার করতে বদ্ধপরিকর।
এর আগে গত ১২ মার্চ দুপুরে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজটি জিম্মি করে সোমালি জলদস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই দফা স্থান পরিবর্তন করে জাহাজটিকে সবশেষ সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করে রাখা আছে।
৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন ‘এমভি আবদুল্লাহ’ আগে ‘গোল্ডেন হক’ নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তৈরি বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেয়। বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী এরকম মোট ২৩টি জাহাজ আছে কবির গ্রুপের বহরে।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।