তিন দিনেই নিহত ৩২৬ জন
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবির আন্দোলন ও পরবর্তী সহিংসতায় তিন দিনেই (৪-৬ আগস্ট) অন্তত ৩২৬ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা, কর্মী ও সমর্থক, পুলিশের সদস্য, শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতা-কর্মী বেশি।
সোমবার (১২ আগস্ট) দেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
ওই প্রতিবেদনে তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই তিন দিনে পুলিশের গুলিতে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আবার পুলিশকেও মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলা ও গুলিতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যু হয়েছে। আবার বিক্ষোভকারী ও প্রতিপক্ষের হামলা এবং অগ্নিসংযোগে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সব মিলিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন, পরবর্তী বিক্ষোভ ও সরকারের পতনের পর সহিংসতায় ১৬ জুলাই থেকে রোববার (১১ আগস্ট) পর্যন্ত অন্তত ৫৮০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৬ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত ২১৭ জন নিহতের খবর পাওয়া গিয়েছিল। ৩২৬ জন নিহত হন ৪ থেকে ৬ আগস্টের মধ্যে। বাকি ৩৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় ৭ থেকে ১১ আগস্টের মধ্যে।
৭-১১ আগস্ট সময়ে কেউ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বেশির ভাগের মরদেহ পরে হাসপাতালে আনা হয়। কখন মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিক্ষোভকারী ও প্রতিপক্ষের হামলা এবং অগ্নিসংযোগে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট (সোমবার) শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। তিনি এখন ভারতে রয়েছেন। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে।
মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৪ থেকে ৬ আগস্ট (রবি থেকে মঙ্গলবার) সময়ে নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ দলটির নেতা, কর্মী ও সমর্থক রয়েছেন অন্তত ৮৭ জন। পুলিশ সদস্য রয়েছেন ৩৬ জন। বিজিবি, র্যাব ও আনসার সদস্য রয়েছেন একজন করে।
১৬ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৪২ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে গতকাল রোববার জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম। তিনি জানান, ৪২ জনের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য র্যাবে নিয়োজিত ছিলেন।
৪ থেকে ৬ আগস্ট সময়ে নিহতদের মধ্যে অন্তত ২৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাঁরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে পড়তেন। এ সময়ে নিহতদের মধ্যে বিএনপি ও দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ১২ জন নেতা, কর্মী ও সমর্থক রয়েছেন।
৩২৬ জনের মধ্যে বাকি ১৬৮ জনের সরাসরি রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই অথবা জানা যায়নি। ৪২ জনের পরিচয়ই এখনো নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। আহত হয়েছেন বহু মানুষ।
রোববার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন রাজধানীর রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ ও অন্যদের গুলিতে অনেক মানুষ মারা গেছেন। পুলিশের ওপরও ব্যাপক হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশকে যারা ব্যবহার করেছে, তাদের বিচার হবে। হুকুমদাতাদের কঠোর শাস্তি হবে।
৪ থেকে ৬ আগস্ট সময়ে নিহতদের মধ্যে অন্তত ২৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে পড়তেন। এ সময়ে নিহতদের মধ্যে বিএনপি ও দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ১২ জন নেতা, কর্মী ও সমর্থক রয়েছেন।