রাজনীতি

দেশের মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশ নায়ক তারেক রহমান বলেছেন, এক যুগেরও বেশি সময় থেকে বিএনপির শত শত নেতাকর্মী গুম খুনের শিকার হয়েছেন। লাখ লাখ নেতাকর্মী গায়েবি মামলার আসামি হয়েছেন।

আমি নিজেও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমরা যে বাড়িতে জন্ম নিয়েছি, তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দেশনেত্রীকে বাড়ি থেকে কীভাবে বের করে দেওয়া হয়েছে তা নিশ্চয়ই মনে আছে। এই মুহূর্ত পর্যন্ত যারা অত্যাচার নির্যাতনের সহ্য করেছেন, যারা দলের নাম ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছেন- এই ত্যাগ নিশ্চয়ই তাদের জন্য নয়? যারাই দলের নাম ব্যবহার করে কোনো অন্যায় করতে চাইবে, দলের সুনাম নষ্ট করতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে সিলেট জেলা ও মহানগরের আয়োজনে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি মতবিনিময় সভায় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি এ কথা বলেন। নগরের একটি কনভেনশন হলে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সব সহকর্মী হত্যার শিকার হয়েছেন, কিছু মানুষ তাদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করতে পারবেন না, আমি কাউকে ছাড়ব না। সময় সুযোগ মতো ব্যবস্থা নেব। আমি আপনাদের মাধ্যমে সবার কাছে একটি ম্যাসেজ পৌঁছে দিতে চাই, কেউ যদি দলকে ব্যবহার করে স্বার্থ হাসিল করতে চায়। তাহলে আমি সুযোগ পেলে সবাইকে খোঁজে খোঁজে আইনের হাতে তুলে দেব।

তারেক রহমান বলেন, আপনারা যে পর্যায়ের নেতাই হোন না কেন, নিজেকে ছোট মনে করবেন না। কারণ আপনি শহীদ জিয়া ও বিএনপির সৈনিক। আপনার দায়িত্ব অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। স্বৈরাচারের পতন হলেও আজকে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে তার দাঁতভাঙা জবাব তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই দিতে সক্ষম। দেশের মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ মানুষ জানে বিএনপি যতবার দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বিগত বছরগুলোতে সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উঠে এসেছেন, তাই আপনারা সবাই পরিক্ষিত নেতা। যেহেতু স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, অনেকেই মনে করছেন আমরা ক্ষমতায় চলে এসেছি। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, আমরা অতিতেও বিরোধী দলে ছিলাম, এখনো আমরা বিরোধী দলে আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা বিরোধী দলে আছি। তাই আমাদের প্রত্যেকটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বিএনপির শীর্ষ নেতা বলেন, যেকোনো মূল্যে আপনাকে আপনার এলাকার মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে, মানুষের প্রত্যাশা মতো চলতে হবে। না হলে আপনি পিছিয়ে পড়বেন। মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাসের মূল্যায়ন করতে হবে। মানুষের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আসছে। সাধারণ মানুষের চিন্তা চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের চিন্তা চেতনারও পরিবর্তন করতে হবে। তাই প্রত্যেককে নিজেদের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী গড়ে তুলতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সামনে স্বৈরাচার ছিল দৃশ্যমান প্রতিপক্ষ, আর আজকে আমাদের দিকে অদৃশ্য প্রতিপক্ষ এগিয়ে আসছে। এরা পেছন থেকে ছুরি মারবে। স্বৈরাচারের পতনের পর বহু ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তা তৃণমূলকেই মোকাবেলা করতে হবে। ষড়যন্ত্র মোকাবেলার পাশাপাশি মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কীভাবে নিজেদের পরিবর্তন করব সেই পরিকল্পনা করতে হবে। আমাদের আগামী দিনের লক্ষ্য হতে হবে, দেশকে ও মানুষকে বাঁচানোর। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জনগণ আমাদের ওপর যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে তা তৃণমূল কখনো নষ্ট হতে দেবে না।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদী লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরি ও আরিফুল হক চৌধুরি, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ্ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরি ও আবুল কাহের চৌধুরি শামিম, জাসাস’র আহ্বায়ক হেলাল খান, সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *